গৌরনদী
গৌরনদীতে প্রশাসনের নাকের ডগায় চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলা গেটে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ চক্ষু হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারনা করে ভুয়া চিকিৎসকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রচারনা চালিয়ে রিয়াদ চশমা ঘরের মালিক নিরীহ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনও ভুক্তভোগীরা অবৈধ হাসপাতাল ও ভূয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে বরিশাল সিভিল সার্জন, গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, গৌরনদী মডেল থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে।
স্থানীয় লোকজন, ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্থ রোগীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মশাং গ্রামের মাহমুদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি গৌরনদী পৌর সভা থেকে রিয়াদ চশমা ঘর এ্যান্ড কসমেটিকস নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স নেন। ওই লাইসেন্স দিয়ে গৌরনদী উপজেলা সদরের উপজেলা গেটে কিছু চশমা ও কসমেটিস ব্যবসা শুরু করে। কিছু দিন যেতে না যেতে সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করতে আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে লিফলেট ও মাইকিং করে বরিশাল ইসলামী চক্ষু হাসপাতালের শাখা হিসেবে প্রচারনা চালায়। প্রচারনায় বলা হয়, বরিশাল ইসলামি চক্ষু হাসপাতালের শাখা এখন গৌরনদীতে। ইসলামি চক্ষু হাসপাতালের ভিশন সেন্টার গৌরনদী উপজেলা গেটের সামনে রিয়াদ চশমা ঘরে কম্পিটরের মাধ্যমে চক্ষু ও মাথা ব্যাথা রোগী দেখা এবং নেত্রনালী, চোখে ছানি পড়া অপরেশন করা হয়। বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক দ্বারা রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়।
সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গৌরনদী উপজেলা সদরের উপজেলা গেটে রিয়াদ চশমা ঘর নামে একটি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন যাবত ভূয়া চিকিৎসক দ্বারা সাধারন মানুষকে চক্ষু চিকিৎসা দেয়ার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারনা করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংক। প্রতিষ্ঠানের চোখের পাওয়ার নির্নয়কারীকে (রিফ্রাকসোনিষ্ট) চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে প্রচারনা চালিয়ে রোগীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে বিএমডিসির কোন সনদ নেই। রিয়াদ চশমা ঘরে অবৈধভাবে মেডিসিন বিক্রি করে আসছে। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী মেডিসিন বিক্রি করতে হলে ট্রেড ও ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন। কিন্তু রিয়াদ চশমা ঘর মেডিসিন বিক্রির জন্য কোন ট্রেড লাইসেন্স বা ড্রাগ লাইসেন্স নাই। প্রতারনার হাত থেকে এলাকাবাসিকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রুনু আক্তারকে (৩৮) চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে পরামর্শ পত্র দিয়েছেন। ওই পরামর্শ পত্রে বরিশাল চক্ষু হাসপাতালের প্যাড ব্যবহার করা হয়। রুনু আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ভূয়া ডাক্তর চিকিৎসার নামে আমার সাথে প্রতারনা করেছে। তার পরামর্শ অনুযায়ি ঔষাধ খেয়ে আমার আরো ক্ষতি হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম (৫০) ও সুজন হাওলাদার (৩৩) অভিযোগ করে বলেন, চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছে মাইকিং শুনে সেবা নিতে আসি। পরে জানতে পারি এখানকার চিকিৎসক আসলে চোখের পাওয়ার নির্নয়কারী। ইসলামী হাসপাতালের শাখার নামে মানুষকে প্রতারিক করা হচ্ছে। গৌরনদীর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড জানান, বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার এখতিয়ারভূক্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সহায়তা চাইলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরিশাল সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে লিখিত পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কোন অবৈধ প্রতিষ্ঠান পরিচালণার সুযোগ নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আমরুল্লাহ বলেন, শীঘ্রই টিম গঠন করে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে।