গৌরনদী
গৌরনদীতে ইউপি চেয়ারম্যানের উপর হামলা মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার-২
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত ও মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় বুধবার রাতে নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ জনের বিরুদ্ধে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ বুধবার গভীর রাতে এজাহার নামীয় আসামি দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরন করেছে।
স্থানীয় লোকজন ও দলীয় সূত্র জানান, গৌরনদী উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী, গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ হারিছুর রহমানের সমর্থক ছিলেন চাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং তার প্রতিপক্ষ ৫নং ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) সদস্য ও চাদশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান ছিলেন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও গৌরনদী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন মিয়ার সমর্থক। নির্বাচন থেকে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য মেহেদী হাসানের মধ্যে বিরোধ চলে অসছিল। বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার রাতে চেয়ারম্যানের উপর মেম্বর ও তার সমর্থকরা হামলা চালায়।
গৌরনদী উপজেলার চাদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এজাহারে বলেন, আমি তার সহযোগী সেন্টু সরদারকে নিয়ে নিজবাড়ি থেকে মটরসাইকেল যোগে (ঢাকা মেট্রো-ল- ৩৩২৪) গৌরনদী বন্দরস্থ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় গত মঙ্গলবার রাতে গোবর্দ্ধন তুলার মিলের সামনে সেকেন্দার মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে পৌছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ৫নং ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) সদস্য ও চাদশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান (৪০), উপজেলা যুবলীগের সদস্য মানিক সরদার (৪২), ওবায়েদুর রহমান (৩২), সৈয়দ জসিম (৩৮), সাইফুল সরদার (৪০) ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ রাজীব হোসেন (৩০), উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মোঃ হাবিব চোকদার (২৮), সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ও কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরিফ মিয়া (২৫), সাবেক ইউপি সদস্য সেলিম সরদার (৫০), ছাত্রলীগ সদস্য সৈয়দ নুর (২০), সৈয়দ শান্ত (২২) ও মানইনুদ্দিন সরদার (২৬)সহ ৭/৮ জন সন্ত্রাসী সটগান, পেট্রোল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার পথরোধ করে হামলা চালায়। নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান তার হাতে থাকা বিদেশী সটগান দিয়ে আমাকে পিটিয়ে আহত করে এবং এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী হাবিব সরদার তার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একাধিক পেট্রোল বোমা বের করে বিস্ফোরন ঘটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। অন্যান্য সন্ত্রাসীরা আমার মটরসাইকেলে আগুন দিয়ে সম্পূর্নভাবে ভস্মিভূত করেছে। আমাকে রক্ষায় আমার সহযোগী সেন্টু সরদার এগিয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে জখম করেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ৫নং ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) সদস্য ও চাদশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, আমি ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম না এবং ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। থানা হাজতে থাকা মানিক সরদার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আমি বিজয়ী চেয়ারম্যান মনির মিয়ার পক্ষে কাজ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরাজিত প্রার্থী হারিছুরের সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল আমাকে মামলায় আসামি করেছে। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসিতদন্ত) মোঃ মাজাহারুল ইসলাম বলেন, হামলা, বোমাবাজি ও মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ৫নং ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) সদস্য মেহেদী হাসানকে প্রধান আসামিসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৮ জনকে আসামি করে বুধবার রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই পুলিশ এজাহার নামীয় আসামি আরিফ মিয়া ও মানিক সরদারকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরন করেছে।


