গৌরনদী
গৌরনদীতে আধা কিলোমিটর কর্দমাক্ত সড়ক, ৪ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিল্লগ্রাম থেকে গৌরনদী পৌরসভার হরিসোনা সাড়ে ৪ কিলোমটিার পাকা সড়কের মাঝখানে আধা কিলোমিটার কাঁচা সড়কে ৫০ বছর ধরে চার গ্রামের মানুষ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কর্দমাক্ত পথেই ভোগান্তি নিয়ে চলছে রিকসা, ভ্যানসহ ছোট ছোট যানবাহন। এলাকাবাসি সড়কটির আধা কিলোমিটার পাকাকরনের জন্য বছরের পর বছর উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে অবেদন করলেও কোন কাজ হচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাধীনতা পূর্ববর্তি সময়ে গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ইউনিয়নের হরিসোনা থেকে বিল্লগ্রাম সাড়ে ৪ কিলোমিটর সড়ক ইউনিয়ন পরিষদে সড়কে অর্ন্তভূক্ত করে । স্বাধীনতাত্তর সময়ে মাহিলাড়া ইউনিয় পরিষদ সড়কটিতে ইট বসিয়ে আধাপাকা করে। ১৯৯৬ সালে হরিসোনার কিছু অংশ পৌর সভার অর্ন্তভূক্ত হলে হরিসোনা থেকে বিল্লগ্রাম ঠাকুর বাড়ি মসজিদ পর্যন্ত পৌরসভার উদ্যোগে কার্পেটিংকরন করা হয়। অপরদিকে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বরিশাল এলজিইডি বিল্লগ্রাম বাজার থেকে পূর্ব দিকে পাকাকরন করে। কিন্তু মাঝখানের স্থানটুকু অজ্ঞাতকারনে পাকাকরনে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। মাঝের আধা কিলোমিটর সড়ক সংস্কার কিংবা পাকা না হওয়ায় গত ৫০ বছরে ইট বিলুপ্তি হয়ে কর্দমাক্ত সড়কে পরিনত হয়েছে এবং ঠাকুরবাড়ি প্রায় একশত ফুট রাস্তা ভেঙ্গে পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিল্লগ্রাম বাজার থেকে গৌরনদী পৌরসভার হরিসোনা সড়কের দুইপাশ পাকা। মাঝখানে ঠাকুর বাড়ি অংশ কাঁচা হওয়ায় কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে সড়কটির অনেকখানি অংশ পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। কাঁদার মধ্য দিয়ে চলছে অটো, রিকসা, ভ্যানসহ ছোট ছোট যানবাহন । জনবহুল ব্যস্থতম সড়কে কাঁদার মাড়িয়ে পথ চলছে শত শত মানুষ। এদের দূর্ভোগ আর ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
হরিসোনা গ্রামের আক্কেল আলী (৭০) জহুর তালুকদার (৫০)সহ অনেকেই জানান, হরিসোনা বিল্লগ্রাম সড়কে হরিসোনা, কাসেমাবকাদ, বিল্লগ্রাম, গেলাকুল গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। এই সড়কটি দিয়ে শনিবার ও বুধবার সাপ্তাহিক হাটে ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহন করে। এতে ব্যবসায়ীসহ সাধারন মানুষের বিল্লগ্রাম বাজারে যেতে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। এ ছাড়া এই সড়কে মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, টেম্পু ও রিকসা ভ্যানে ৪ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। ভূক্তভোগী মমতাজ বেগম (৬০), আনোয়ার সিকদার (৬০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়কটির দুই পাশ থেকে পাকা করা হলেও অদৃশ্য কারনে মাঝের আধা কিলোমিটার গত ৫০ বছরেও পাকাকরন করা হয়নি। ফলে ওই অংশটুকু বিলীন হয়ে গেছে। বর্ষার মৌসুমে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হরিসোনা মসজিদের পশ্চিম পাশে ভেঙ্গে পুকুরে গেছে। প্রায়ই ছোট যানবাহন চলচলে দূর্ঘটনা লেগে থাকে। পালরদী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, কাসেমাবাদ আলীয়া মাদ্রসা, হরিসোনা সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা জানান, এই কর্দমাক্ত সড়ক দিয়ে তাদের প্রতিদিন স্কুল ও কলেজে আসা যাওয়া করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পায়ে বিভিন্ন চর্মরোগসহ পায়ে ঘাঁ হয়ে যায়। বিভিন্ন সময় গ্রামবাসি চেয়ারম্যান মেম্বরের কাছে আবেদন নিয়ে গেলেও তারা জন সাধারনের দূর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই। এলাকাবাসি গত বুধবার উপজেলা প্রকৌশলী, নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে সড়কের মাঝের অংশটুকু পাকাকরনের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মিজানুর রহমানের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ন, এলজিইডি ও পৌর সভা দুই দিক থেকে আলাদা আলাদা স্কীমে সড়ক পাকা হওয়ায় মাঝের অংশটুকু বাদ পড়েছে। আমরা পরিষদ থেকে একাধিকবার স্কীম তৈরী করে পাঠিয়েছি কিন্তু দীর্ঘ দিনেও পাকা হয়ন। জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি পাকা করনের জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই। গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ অহিদুর রহমান বলেন, অনেক আগেই স্কীম তৈরী করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।