গৌরনদী
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গৌরনদীতে ছাত্রলীগ দুই পক্ষে সংঘর্ষ, ৭ পুলিশসহ আহত-১৭, আটক-২
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম / আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের গৌরনদীতে ছাত্রলীগ দুই পক্ষের মধ্যে শনিবার দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে সাত পুলিশসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়। পুলিশের ৭ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ৬ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে গুরুতর মাহাবুব হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
গৌরনদী পৌর আওয়ামীলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য রাশেদুজ্জামান ঝিলাম ভূইয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার জমিতে বালু ভরাট করতে গেলে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভিপি সুমন মোল্লা তাতে বাধা দেয়। শনিবার ছাত্রলীগ নেতা সুমন মোল্লার নেতৃত্বে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী আমার বাসায় গিয়ে কেন তার লোকজনকে বালু ভরাট কাজ দেয়া হয়নি জানতে চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে। আমাকে রক্ষায় স্ত্রী শারমিন জাহান (৪০) এগিয়ে এলে তাকেসহ আমার সন্তানদের মারধর করে বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সুমন মোল্লা বলেন, বালু ভরাট নিয়ে বিরোধ হলে রাশেদুজ্জামান ঝিলাম ভুইয়া বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে আমাকে তার বাসায় ডেকে পাঠান। আমি রাশেদুজ্জামানের টরকীর বাসায় গেলে দরজা বন্ধ করে আমার ওপর হামলা চালায়। শুধু তাই নয় রাশেদুজ্জামান ঝিলামের চাচাতো ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়েরুল ইসলাম সান্টু ভুইয়ার নেতৃত্বে ৫০/৬০ সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে হামলা করে বসত ঘর ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় আমার মা মিনারা বেগম (৫০) বাধা দিলে তাকে ও আমার সমর্থক সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুজনকে (৩৬) পিটিয়ে আহত করে। পরবর্তিতে সান্টু ভুইয়া আমার শ্বশুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকে খুজতে থাকে না পেয়ে শ্বশুর বাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুমন মোল্লার বাড়িতে হামলা খবর ছড়িয়ে পরলে সুমন মোল্লার নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন সমর্থক লাঠিসোটা নিয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে জোবায়েরুল ইসলামের সান্টু ভুইয়ার সমর্থকদের আহত করে ২৫টি মটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়েরুল ইসলাম সান্টু ভুইয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সুমন মোল্লার সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নেই । হামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। রাশেদুজ্জামান ঝিলামের বাড়িতে সুমন মোল্লা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করলে রাশেদুজ্জামানের সমর্থকরা পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার বলেন, হামলা ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় এখনও থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।