গৌরনদী
চূড়ান্তবিল নেওয়ার ৬মাস পর শুরু, শেষ না হতেই ভেঙ্গে পড়ল
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ননের পশ্চিম ফুলশ্রী ফকির বাড়ি জামে মসজিদের মুসল্লীদের সুবিধ্যাার্থে পুকুরে ঘাটলা নির্মানের কাজ না করেই চূড়ান্ত বিল তুলে নেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়দের চাপের মুখে অবশেষে নির্মান কাজ শুরু করলেও কাজ শেষ না হতেই ভেঙ্গে পড়ল। ঠিকাদারের দূর্নীতি ও অনিয়মসহ নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন, মসজিদ কমিটি ও মুসল্লীরা ।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন, মুসল্লী ও সংশ্লিষ্টদে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি) অধীনে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলশ্রী ফকির বাড়ি জামে মসজিদের পুকুরে একটি ঘাটলা নির্মান প্রকল্প গ্রহন করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৭-২০১৮ইং অর্থ বছরে তলাখ টাকার প্রকল্প তৈরী করে গত মার্চ মাসে দরপত্র আহবান করেন। সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে মেসার্স ঐশি ট্রেডার্সের মালিক মো. আবু সাঈদকে এপ্রিল মাসে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কাজটি জুন মাসের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবু সাঈদ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ না করে গত জুন মাসে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করেন।
এলাকাবাসি জানান, ঠিকাদার বিল তুলে নেওয়ার পরে ৬মাস অতিবাহিত হলেও ঘাটলা নির্মান না করায় তারা ঠিকাদারকে বিভিন্ন সময় অনুরোধ জানান। ঠিকাদার ঘাটলা নির্মান কাজ না তালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটির লোকজন ও মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসি ও সুবিধাভোগীরা উপজেলা প্রকৌশলীসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানান। চলতি মাসের ১৫ নভেম্বর ঠিকাদার ঘটলা নির্মান কাজ শুরু করে মঙ্গলবার ঢালাই কাজ শেষ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় তিন মুসল্লী অভিযোগ করেন, ঠিকাদার ঘাটলা নির্মান কাজ অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছে। ঘাটলা নির্মান কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে। পচা খোয়া, ভিট বালু দিয়ে কাজ করেছেন। নড়বড়ে ভিত তৈরী করে তার ওপর ঢালাই দিয়েছেন। কাজে নিদৃষ্ট করা রড ব্যবহার করা হয়নি। ফলে নির্মান শেষ না করতে ঘাটলাটি ভেঙ্গে পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদ্য ঢালাই দেয়া ঘাটলাটির শেষ অংশের ভিত ডেবে গেছে। এতে ঘাটলার ঢালাই দেয়া শেষ অংশের স্পানটি ক্ষতিগ্রস্থ হযেছে। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন, কাজে অনিয়ম ও দূর্নতি করা হয়েছে। নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে এবং ঠিকমত ভিত না করায় নির্শান কাজ শেষ হতে না হতেই ভেঙ্গে পড়েছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান ফকির ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, অজু করতে মুসল্লীদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বহু কষ্টের পরে এলজিইডিরি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঘাটল নির্মান প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। তা কাজ শেষ না করতে ভেঙ্গে গেছে।
অনিয়ম দূর্নীতি ও নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার মো. আবু সাঈদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় কোন্দলের কারনে কতিপয় লোকজন কাজে সমস্যার সৃষ্টি করে এবং তারা কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ও ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করতে বাধা দেন। পরবর্তিতে কমিটির সিদ্বান্ত অনুযায়ী কাজ করতে গেলে সেন্টারিং ডেবে সামান্য কিছু সমস্যা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত আগৈলঝাড়া উপ-সহকারী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র হাওলাদার ডেবে ভেঙ্গে পরার কথা স্বীকার করে বলেন, কাঁদা মাটেিত ত্রæটপর্ূিণ সেন্টারিং এর জন্য এমটা হয়েছে। তবে কাজরে মান সন্তোষজনক। ত্রæটিযুক্ত অংশ ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে কাজ করতে ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশলী রাজ কুমার গাইন বলেন, ঠিকাদারকে ক্ষতিগ্রস্থ ভীত ভেঙ্গে নতুন করে কাজ করতে বলা হয়েছে, অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ননের পশ্চিম ফুলশ্রী ফকির বাড়ি জামে মসজিদের পুকুরে ঘাটলা নির্মানে অনিয়ম ও নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ না হতেই না হতেই ভেঙ্গে পড়ে। গতকাল শুক্রবার ছবিটি তোলা হয়।