গৌরনদী
গৌরনদীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম বার্থী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল চক্রবর্তী’র বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী’ ও অভিভাবকদের তীব্র ক্ষোভের মুখে তিনদিন ছুটির অবেদন করে ছুটি ভোগ শেষে আগামী একমাসের মেডিকেল ছুটি নিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এ ব্যপারে গতকাল স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নির্যাতিতা ২ ছাত্রী অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল চত্রবর্তী আমাদেরকে লাইব্রেরীতে ডেকে নিয়ে, কখনো কখনো পাঠদানের সময়, কখনো কাজ করানোর সময় বিভিন্ন ছলে আমাদের শরীরে হাত দেয়। অপর দুই ছাত্রী বলেন, মোরা পড়া দিতে না পারলে বড় স্যারে শাসনের নামে মোগো গায়ে হাত দেয়। শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে বিষয়টি তাদের অভিভাবকদেরকে জানায়।
কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয়রা বলেন, প্রধান শিক্ষক বাদল চক্রবর্তির যৌণ হয়রানির বিষয়টি আমরা জানতে পাড়ার পর তাকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর এক ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর তার অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক বাদল চক্রবর্তিকে লাঞ্চিতসহ গালাগাল করেন। এ সময় স্কুলে কর্তব্যরত সহকারী শিক্ষিক রেশমা আক্তার ও সাবেক সহকারী শিক্ষক গৌরাঙ্গ বিশ^াস বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরবর্তিতে তারা বিষয়টি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ্জাহান প্যাদাকে অবহিত করেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহ্জাহান প্যাদা মুঠো ফোনে প্রথম অলোকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে স্কুলে আসতে বারন করেছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিস্তারিত জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বাদল চক্রবর্তিকে অন্যত্র বদলির জন্য সুপারিশ করেছি।
কটকস্থল গ্রামের দুই অভিভাবক জানান, ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর বাদল চক্রবর্তি কটকস্থল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় তাদের কন্যাকে শরীরে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানী করেছিল। ওই সময় অভিভাবক ও স্থানীয়রা বাদলকে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে পরিচালনা কমিটির হস্তক্ষেপে মুচলেকা দিয়ে স্বেচ্ছায় স্কুল ছেড়ে আসেন বাদল। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কটকস্থল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন বলেন, বাদল চক্রবর্তি শিক্ষক নামের কলঙ্ক।
অভিযোগ সমাপর্কে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল চক্রবর্তী বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে। তিন দিনের ছুটি নিয়ে ছুটি শেষে আগামি এক মাসের মেডিকেল ছুটি নেয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন । এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. বদিউজ্জমান বলেন, পূর্বের ঘটনা আমার জানা নেই অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।