গৌরনদী
বিয়ের আসর থেকে বর বিজিবি সদস্য ও কনের বাবাসহ আটক-৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকমঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষনা করার পরেও পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে কোনভাবেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং সরকারি ছুটি থাকায় শুক্রবার আসলেই এ উপজেলার কোন কোন স্থানে বাল্যবিয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রমতে, শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এক ইউপি সদস্যর উপস্থিতিতে বাল্যবিয়ের আসর থেকে বিজিবি সদস্য বর ও কনের বাবাসহ চার জনকে আটক করে পুলিশ। নানা নাটকীয়তার পর ওইদিন রাতে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, পুলিশের ধরা আর ছাড়ার কারনেই বন্ধ হচ্ছেনা বাল্যবিয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল ইউয়িনের পশ্চিম পয়সা গ্রামের ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিকদারের কন্যা ও পয়সা স্কুল এ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুইটি আক্তারের সাথে শুক্রবার পাশ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার হরিনাহাটি গ্রামের মৃত ফয়জর আলী গাজীর পুত্র আল আমিনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বর আল আমিন রাঙ্গামাটিতে বিজিবি সদস্য হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ওই বিয়েতে স্থানীয় ইউপি সদস্য সোবহান মিয়া উপস্থিতি ছিলেন। কনের চাচা নেছার উদ্দিন জানান, তারা আগে থেকে বিয়ের কিছুই জানতেন না। কনের বয়স না হওয়ায় ওই বিয়ে পড়াতে বাকাল ইউনিয়নের নিয়োগকৃত কাজী মনির হোসেন অস্বীকৃতি জানালে কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের কাজী মাওলানা ছামাদ মিয়া কনের বয়স বেশি দেখিয়ে বাল্যবিয়ের কাবিন করেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে বরযাত্রীসহ দাওয়াতী মেহমানদের খাওয়া-দাওয়া চলাকালীন সময় বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে থানার এএসআই শাহ আলম ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিয়ের আসর থেকে বর বিজিবি সদস্য আল আমিন, তার চাচা ও কনের বাবা আবু বক্কর সিকদার ও তার ভাইকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বাল্যবিয়ের অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে বরের সাজা হলে চাকুরী চলে যাওয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বাকাল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোবহান মিয়া ও এএসআই শাহ আলমের নানা নাটকীয়তার পর ওইদিন রাতেই আটককৃতদের ছেড়ে দিয়েছেন থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার বিয়ে হয়নি। বিয়ে আগে হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সহকারী কমিশনার (ভূমি) শতরূপা তালুকদার বলেন, বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি। এছাড়া কোন বিষয় পুলিশের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ওসি যেকোন বিষয়ে প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারেন।