বরিশাল
উজিরপুর প্রশাসন গুড়িয়ে দিলে ছাত্রলীগ নেতার অবৈধ স্থাপনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের রমজানকাঠী সুইজগেট থেকে চৌমোহনী খালের (থান্ডা বিবির খাল) উজিরপুর আটিপাড়া এলাকায় সরকারি খালের মধ্যে বহুতল ভবনের ভীত দিয়ে ভবন নির্মান শুরু করেন বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক সাকিল হোসেন (৩০)। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়দেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে নির্মানাধীন স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়ার কাজ অব্যহত রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন, উপজেলা ভুমি কার্যালয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের রমজানকাঠী সুইজগেট থেকে চৌমোহনী খালের (থান্ডা বিবির খাল) উজিরপুর আটিপাড়া এলাকায় সরকারি খালের মধ্যে বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক সাকিল হোসেন (৩০) খালের প্রায় দেড় শতাংশ দখল করে বহুতল ভবনের ভীত দিয়ে গত ১০/১২ দিন ধরে পাকা ভবন নির্মান শুরু করেন। স্থানীয়রা জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাকিল সরকারি খাল দখল করে খালের মধ্যে পাকা বহুতল ভবন নির্মান শুরু করলে তারা সাকিলকে নিষেধ করে কিন্তু সাকিল স্থানীয়দের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নির্মান কাজ অব্যহত রাখে। আটিপাড়া গ্রামের কেতাব আলী (৬০), রমজানকাঠী গ্রামের আব্দুর জব্বার (৪৫), মমতাজ বেগম (৩৮)সহ অনেকেই জানান, রমজানকাঠী সুইজগেট থেকে চৌমোহনী খালের (থান্ডা বিবির খাল) পানি তুলে সেচ দিয়ে প্রায় ২০ হাজার কৃষক বোরো চাষ করে থাকে। খালের মধ্যে স্থাপনা নির্মানের ফলে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে বোরো চাষ ব্যাহত হয়। তাই তারা খালের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা অপসারনে জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
উজিরপুর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার দেলোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম জানান, খালের মধ্যে অবৈধ ভবন নির্মান শুরু করলে এলাকার লোকজন অবৈধ দখলদার সাকিল হোসেনকে নির্মান কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেন কিন্তু এলাকাবাসি ও সাধারন কৃষকদের অনুরোধ উপেক্ষা করে সাকিল নির্মান কাজ অব্যহতভাবে চালিয়ে যান। পরবর্তিতে গত ২৪ ফেব্রæয়ারি এলাকার লোকজন অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের একটি সূত্র জানান, বিষয়টি জানার পরে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রনতি বিশ্বাস অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়দেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বামরাইল ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা মোঃ কবিরুল ইসলাম, সার্ভেয়ার দেলোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম, জারিকারক আকবর হোসেনকে নিয়ে একটি টিম গঠন করেন। গত মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়দেব চক্রবর্তী পুলিশ ও একদল শ্রমিক নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেন। সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মান সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থাপনা নির্মানের কথা স্বীকার করে বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক সাকিল হোসেন বলেন, আমি ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিক। নিজের ক্রয়কৃত জমিতে স্থাপনা নির্মান করেছি, সরকারি জমি দখল করিনি।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রনতি বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেন, নদী খাল দখলমুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এবং দ্রæতভাবে খালের পানি চলাচলে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, মঙ্গলবার থেকে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে ফেরার কাজ চলছে। সম্পূর্ন উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত কাজ অব্যহত থাকবে। কাউকেই সরকারী খাল ও জমিতে অবৈধভাবে কোন স্থাপনা তৈরী করতে দেওয়া হবেনা। যে কোন মূল্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। স্থানীয় প্রশাসনের অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রমে খুশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।