বরিশাল
বাঁধ অপসারনের দাবিতে আগৈলঝাড়ায় কৃষকদের বিক্ষোভ মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা রাজিহার খালে একটি সেতু নির্মান করার জন্য খালে দুটি বাঁধ দেন ঠিকাদার। এতে তিনটি ইউনিয়নের আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ বন্ধ হয়ে যায়। কৃষকের দাবির মুখে অবশেষে ৭ জানুয়ারি বাঁধটি কেটে অপসারন করা হয়। বর্তমানে নতুন করে বাঁধ দেয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল করে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে।
আগৈলঝাড়ার গৈলাÑরাজিহার খালের আগৈলঝাড়া সদরে থানার সামনে আরসিসি কংক্রিট সেতু নির্মানের জন্য বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের অধীনে একটি প্রকল্প গ্রহন করেন। গত ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জন্য মেসার্স মাহফুজ খান নামে এক ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে ঠিকাদার গত ১ জানুয়ারি খালের মধ্যে দুটি বাঁধ নির্মান করেন। বাঁধ নির্মানের ফলে রাজিহার গৈলা খালের ৩৫ টি বোরো চাষ প্রকল্পের অওতায় থাকা আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ বন্ধ হয়ে যায়। কৃষকদের দাবির মুখে গত ৭ জানুয়ারি বাঁধ দুটি অপসারন করে পানি সরবারহ করা হয়। সোমবার বাঁধ দুটি পুনরায় বন্ধ করে দেন ঠিকাদার।
বিক্ষুব্ধ কৃষক রমনী কান্ত সরকার, আনিচ মোল্লা, ইদ্রিস খান, বাবুল সরদার, সুমন মোল্লা, মহিদুল মোল্লা, বলেন, অঅমাদের দাবির মুখে জানুয়ারি মাসে বাঁধ খুলে দেয়া হলে আমরা জমিতে বোরো চারা রোপন শুরু করি। বর্তমানে ধান গাছের গোড়ায় পানির খুবই প্রয়োজন। কিন্তু ঠিকাদার নতুন করে বাঁধ নির্মান করলে জমিতে পানি সরবারহ বন্ধ হয়ে যায় । পানির অভাবে ধান গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। ফলে আমদের অপুরনীয় ক্ষতি হচ্ছে।
বাঁধ অপসারন করে জমিতে পানি সরবারহের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার পশ্চিম সুজনকাঠী, বটতলা, রাহুতপাড়া, অশোকসেন, তালতা, চান্দেরবাজার, কালুপাড়া, ভদ্রপাড়া, বড়ইতলা, সানুহার, ঐচারমাঠ ও রামের বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশত কৃষক বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন এবং সেখানে বিক্ষোভ করেন। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাসির উদ্দিন কৃষকদের বাঁধ অপসারনের আশ্বাস দিলেও কৃষকরা বিক্ষোভ অব্যহত রাখেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস কৃষক প্রতিনিধি, বরিশাল সওজ কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় কৃষকদের পক্ষে দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কৃষক রমনী কান্ত সরকার, আনিচ মোল্লা, ইদ্রিস খান, বাবুল সরদার, সুমন মোল্লা, মহিদুল মোল্লা, আনোয়ার খান, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক সরদার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.নাসির উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার। বৈঠকে বরিশাল সওজ’র কর্মকর্তা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.ফিরোজ আজম খান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম, এম হানিফ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ সময় বৈঠক হলেও কোন সমাধান হয়নি। সাধারন কৃষকরা তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন। তাদের একটাই দাবি জমিতে পানি সরবারহ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষনে বাঁধ কেটে পানি সরবারহ করা হয়েছিল বর্তমানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধ প্রয়োজন। কারন বর্ষা মৌসুম আসার আগে সেতু নির্মান না করলে উন্নয়ন প্রকল্প ব্যাহত হবে। কৃষকদের দাবি ফালগুন মাস পর্যন্ত বাঁধ খোলা রাখতে হবে যা পুরন করা জটিল। তাদের দাবি মানলে উন্নয়ন কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন বিধায় জরুরিভিত্তিতে স্থানীয় সাংসদকে অবহিত করে তার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।