সারাদেশ
গৌরনদীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের নামে ৪শ টাকা করে আদায়
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম / বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে প্রবেশপত্রের নামে কোন টাকা নেওয়া যাবে না নির্দেশনাপত্র দেন। শিক্ষা বোর্ডের এ নির্দেশ উপেক্ষা করে গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে প্রবেশপত্রের নামে সাড়ে ৩শ টাকা থেকে ৪শ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলেছেন প্রবেশপত্রের জন্য নয়, জেলা প্রশাসক, ইউএনও, ওসি ও শিক্ষা অফিসারসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানী ব্যয়বহন করতে টাকা নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, উপজেলার সবগুলো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন্দ্র ফিসসহ সব টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ওই সময় প্রবেশ পত্রের নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা আদায় করে নেন।
২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরনে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা ১৬৩০, বিজ্ঞান ১৭২০ টাকা ফি নির্ধারন করেন। অনিয়মিতদের জন্য অতিরিক্ত ১০০ টাকা আদায় করার নির্দেশ দেন। কিন্তু গৌরনদী উপজেলার ২৬টি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এ নির্দেশনা অমান্য করে ফরম পুরনে সর্বনিন্ম সাড়ে ৩ হাজার ও সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।
উপজেলার বাটাজোর অশ্বিনী কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বার্থী তারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাহিলাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, গৌরনদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শরিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কমপক্ষে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসএসসির প্রবেশপত্রের নামে ৪শ টাকা ও প্রত্যেক ব্যবহারিকের নামে ২শ টাকা করে আদায় করছে।
বাটাজোর অশ্বিনী কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালযের অভিভাকব ও বাটাজোর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা রানী, গৌরনদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক মো, বাবুল হোসেন ও অনোয়ারুল হক অভিযোগ করে বলেন, তাদের ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে প্রবেশ পত্রের জন্য ৪শ টাকা নেওযা হয়েছে। সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার কোন পাওনা টাকা না থাকা সত্যেও তার কাছ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রবেশপত্রের নামে জন্য ৩৫০ টাকা নিয়েছেন। মাহিলাড়া হাইস্কুল প্রবেশ পত্রের জন্য ৪শ টাকা, শরিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গৌরনদী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, প্রবেশপত্রের নামে তাদের কাছ থেকে ৪শ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
গৌরনদী গালর্স স্কুল এ্যাÐ কলেজের অধ্যক্ষসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, প্রবেশপত্রের জন্য নয়, জেলা প্রশাসক, ইউএনও, ওসি ও শিক্ষা অফিসারসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানী ব্যয়বহন করতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সরকারি গৌরনদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. অলি উল্লাহ বলেন, আমি ষ্টেশনে না থাকা টাকা নেওয়া হয়েছিল আমি এসে তা ফেরত দিয়েছি। পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন কুমার, খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নলচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যায়য়, মেদাকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাঁদশী ঈশ্বর চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরিকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বার্থী তারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টাকা নেওয়ার কথা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আঃ জলিল বলেন, এ্সএসসির প্রবেশপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে ফি না নেয়ায় বোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে। টাকা নেওয়ার সু-নিদৃষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে । সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানী দেয়া প্রসঙ্গে বলেন, পূর্বে সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি যোগদানের পরে নিষেধ করে দিয়েছি। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা নাসরিন এ প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষকদের দাবি সঠিক নয়, নিজেদের রক্ষায় এ ধরনের কথা বলছে।