বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় স্বাস্থ্যকার্ড দেয়ার নামে টাকা আদায়, উঠানো টাকা ফেরতসহ দুই ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট চাকুরীচ্যূত
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) প্রকল্পের অধীনে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) স্বাস্থ্যকার্ড সবিধাভোগীর তালিকা প্রনয়নে অর্থ আদায় করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পাওয়া গেছে দুই মাঠ কর্মির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দুই মাঠকর্মির প্রনয়নকৃত তালিকা বাতিল, সুবিধাভোগীদের টাকা ফেরত দেয়াসহ বৃহস্পতিবার তাদের চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী, স্থাণীয় লোকজন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) প্রকল্পের অধীনে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তি সম্পন্ন করে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। এ কর্মসূচীর আওতায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৪ শত ৬৩টি পরিবারকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়ার জন্য সুবিধাভোগী তালিকা প্রনয়নের জন্য উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১০জন ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয়। আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) স্বাস্থ্যকার্ড সবিধাভোগীর তালিকা প্রনয়নে দায়িত্ব পান ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট সৈকত মধু ও কবিতা খানম।
ভূক্তভোগী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) স্বাস্থ্যকার্ড সবিধাভোগীর তালিকা প্রনয়নে দায়িত্ব পান ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট সৈকত মধু ও কবিতা খানম তালিকা প্রনয়ন করতে গিয়ে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে হাতিয়ে নেন। অর্থ না দিলে তাদের কার্ডের জন্য নিবন্ধন করা হত না। আগৈলঝাড়া সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলেিগর সভাপতি বরুন কুমার বাড়ৈ অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্যকার্ড সবিধাভোগীর তালিকা প্রনয়নে দায়িত্ব পান ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট সৈকত মধু ও কবিতা খানম হতদারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের তথ্য সংগ্রহ ও স্বাস্থ্যকার্ড নিবন্ধনে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে হাতিয়ে নেন। তাকে ৫০/১০০ টাকা না দিলে নিবন্ধন করা হত না। ওই দুই মাঠ সংগঠক যে সকল নিবন্ধন দিয়েছেন প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট সৈকত মধর কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। আরেক ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট কবিতা খানম অর্থ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন টাকা নেইনি। আমাকে ষরযন্ত্র করে ফাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) কর্মসূচী কর্মকর্তা নাজমুল হক অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে াভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হলে উর্ধতন কর্তপক্ষ গত বৃহস্পতিবার এক আদেশে সৈকত মধু ও কবিতা খানমের প্রনয়নকৃত তালিকা বাতিলসহ তাদের দুজনকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।
আগৈরঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির (এসএসকে) আওতায় বিভিন্ন পরিবারকে স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়ার নামে টাকা নেয়ার ঘটনা আমি জানার পরে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। তারা ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুইজনকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করেছে এবং সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে।