গৌরনদী
গৌরনদীতে দুই ইউপি সদস্য-যুবলীগ নেতার সংঘর্ষে আহত-১০, ৩টি দোকান ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্য ও যুবলীগ নেতার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলার ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৩টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। দোকান ভাঙচুর ও ব্যবসায়ীদের উপর হামলার প্রতিবাদে চাঁদশী বাজারের ব্যবসায়ীরা রোববার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা দুপুর ১২টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় বাজারে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রদক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য, উপজেলা যুবলীগের সদস্য লটন সরদার (৩৬)র সঙ্গে ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য সৈয়দ সুলভ(৩৫) মধ্যে র্দীঘ দিন যাবত আধিপত্যকে বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় লিটন সরদারের বড় ভাই বনি আমীন সরদার(৪৮)র চাঁদশী বাজারে হার্ডওয়ার দোকানে গিয়ে সৈয়দ সুলভের সমর্থকরা গালাগাল করে এক পর্যায়ে তাকে লাঞ্চিত করে। সে পাল্টা প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে পরবর্তিতে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
লিটন সরদার অভিযোগ করেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে নাঠৈ গ্রামের সৈয়দ সুলভের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন সমর্থক লাঠিসোটা ও লোহার রট নিয়ে অর্তকিত ভাবে চাঁদশী বাজারে তার বড় ভাই বনি আমীন সরদারের দোকানে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা তাকে (লিটন সরদারকে) খোজাখুজি করতে থাকে। না পেয়ে তার বড় ভাই বনি আমীন সরদারের হার্ডওয়ার দোকান ভাঙচুর করে তাকে মারধর করে জখম করে। বাজারের ব্যবসায়ী ও তার স্বজনরা পাল্টা হামলা চালালে ঊভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সৈয়দ সুলভ বলেন, শনিবার রাতে আমার সমর্থক শামীম মীর(২৪) চাঁদশী বাজারে গেলে লিটন সরদারের নেতৃত্বে ২০/২৫জন সমর্থক ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে পিটিয়ে জখম করে। এ খবর পেয়ে আমি জানতে গেলে লিটন সরদার সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমার ও আমার সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এতে আমার ৬/৭ জন সমর্থক আহত হয়।
হামলা ও সংঘর্ষে চাঁদশী বাজারের গিয়াস উদ্দিন কাজীর হোটেল এ্যা- রেষ্টুরেণ্ট, বেপারী ফার্মেসী ও হার্ডওয়ার দোকান ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে সৈয়দ সুলভের সমর্থক মামুন মীর(২৪), শামীম আকন (মকবুল সরদার(৪০), লিটন সরদারের ভাই বনি আমীন সরদার(৪৮), ইফাদ হোসেন(২২), তানজিল(২৪)সহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত বনি আমীন সরদার(৪৮), মামুন মীর(২৪), বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দোকান ভাঙচুর ও ব্যবসায়ীদের উপর হামলার প্রতিবাদে চাঁদশী বাজারের ব্যবসায়ীরা রোববার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের দুপুর ১২টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, বাজারে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।