গৌরনদী
৩ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে দুদক ॥ গৌরনদী থানার সাবেক ওসি ফিরোজ কবিরের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বাংলাদেশ পুলিশ বরিশাল জেলায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক ও বিভিন্ন অপকর্ম ও অভিযোগে গৌরনদী মডেল থানা থেকে সাড়ে তিন মাসের মাখায় প্রত্যহার হওয়া বরিশাল পুলিশ লাইনে সংযুক্ত (ওসি) মোঃ ফিরোজ কবির ও তার স্ত্রী সাবরিনা আহম্মেদের বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকা পাচার (মানি ল-ারিং) ও বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়েরর অনুমোদন দিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। গত রবিবার দূর্নীতি দমন কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্বান্ত হয়। দূর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্রাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিদর্শক ফিরোজ কবির বর্তমানে বরিশালে পুলিশ পরিদর্শক হিসেব কর্মরত।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ফিরোজ কবিরের বিরুদ্ধে এক কোটি ৭৩ লক্ষ ৯ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ও ফিরোজ কবিরের স্ত্রীর সাবরিনা আহম্মেদের নামে ৭০ লক্ষ ৮হাজার ৭৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক। ফিরোজ কবির ও স্ত্রী সাবরিনা আহম্মেদের নামে মোট দুই কোটি ৪৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৭৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে। তাদের অবৈধ দৃশ্যমান সম্পদের মধ্যে রয়েছে চারটি বিলাসবহুল ফ্লাট। এসব ফ্লাটের দলিল মূল্য উল্লেখ্য করা হয়েছে মাত্র ৮৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এছাড়া রয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি। গারিড় দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ৯ লক্ষ টাকা। রয়েছে ৬৫ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র, টার্ম ডিপোজিট ২৭ লক্ষ টাকা, ডিপিএস ৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা ও সঞ্চয়/চলতি হিসেবে আছে ৫ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। দুদকের অনুসন্ধানে আরো বেড়িয়ে আসে ফিরোজ কবির ও তার স্ত্রী সাবরিনা আহম্মেদের ব্যাংক হিসেবে বৈধ আয়ের অতিরিক্ত ৩ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে।
দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)র উপ-পরিচালক মোঃ আহমার উজ্জামান বলেন, কমিশনের অনুসন্ধানের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেয়ারম্যান মামলা দায়েরের অনুমোদন দিলে ফিরোজ কবির ও তার স্ত্রী সাবরিনা আহম্মেদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। এ প্রসঙ্গে পরিদর্শক ফিরোজ কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আয়কর বর্হিভূত কোন সম্পদ আমার নেই। কেবা কারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য ওসি ফিরোজ কবির গত ২ এপ্রিল গৌরনদী মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। শুরুতে এক মাস মাদক বিরোধী তৎপরতা চালিয়ে সফলতা লাভ করার শতকরা ৮০ ভাগ মাদক নির্মূল করে সু-নাম কুড়িয়ে পরবর্তিতে মাদক নির্মূলের অন্তরালে বানিজ্য শুরু করেন। তিনি নিরহ প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের মাদকে জড়ানোর হুমকি দিয়ে হয়রানী ও নির্যাতন করে অর্থ হাতিয়ে নেন। পুলিশ সদর দপ্তর ও বরিশাল পুলিশ সুপার বরাবরে ক্ষতিগ্রস্থ ও ভূক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে অভিযোগের তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ফিরোজ কবিরকে সাড়ে তিন মাসের মাথায় গৌরনদী মডেল থানা থেকে প্রত্যহার করে বরিশাল পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়।