গৌরনদী
মুক্তিযোদ্ধার অসহায় বিধবা স্ত্রীর বাড়িতে ইউএনও
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধার অসহায় বিধূবা স্ত্রীর রোজিনা সুলতানার আকুতি নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় গত ৩ মে “বসত ভিটা দখলের চেষ্টা মামলা করে বিপাকে” শিরোনামে একটি সংবাদ হয়। মঙ্গলবার দুপুরে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বিধূবা স্ত্রীর রোজিনার বাড়িতে যান। এ সময় পরিবারের খোজ খবর নেন এবং পরিবারটি ইফতারিসহ খাদ্য সামগ্রী প্রদান ও নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
সংবাদ সম্মেলনে রোজিনা সুলতানা লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার পূর্ব হোসনাবাদ মৌজার আর.এস. সি.এস ও হাল জরিপে ৫৯ শতাংশ জমির মালিক আমার স্বামী ফরিদ উদ্দিন ও তার ভাইয়েরা। আমার স্বামী উক্ত সম্পত্তি গত ৫০ বছর ধরে ভোগ করে আসছিল। ২০১৭ সালের ২৫ জুন আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরিদ উদ্দিন মারা যান। তার মৃত্যুতে পুত্র সন্তানকে নিয়ে আমি অসহায় হয়ে পড়ি। স্বামীর মৃত্যুর পরে মৃত সিরাজ উদ্দিন বেপারীর পুত্র প্রভাবশালী প্রতিবেশী নুর ইসলাম সম্পত্তি দখল নিতে বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে আমার ভিটেমাটি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে । গত ১৭ মার্চ প্রতিপক্ষ নুর ইসলাম বেপারীর নেতৃত্বে তার ছেলে ফিরোজ বেপারী, মিরাজ হোসেন ওরফে সিরাজ উদ্দিন ভাড়াটে ১০/১২ সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা করে বসত ঘর ভাঙচুর ও প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। বাড়ির বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ প্রায় ২০/২৫টি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে আমি গৌরনদী থানায় গত ২৩ মার্চ একটি মামলা করি। গত ২৯ মার্চ আসামিরা আদালত থেকে জামিয়ে এসে ৩০ মার্চ আমার বাড়িতে পুনরায় দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়ে ভাতিজা জুয়েল হাওলাদারকে মারধর করে আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে আমি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করলে পুলিশ বিষয়টি জিডি হিসেবে গ্রহন করেন। আমি বাড়ি না ছাড়ায় গত ১৬ এপ্রিল সন্ত্রাসীরা বাড়ি দখল নিতে তৃতীয় দফায় হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে নতুবা আমাকে ও আমার কলেজে পড়–য়া ছেলে ফাহিম হাওলাদারকে (১৭) হত্যার হুমকি দেন। হুমকির ঘটনায় গত ২০ এপ্রিল গৌরনদী মডেল থানায় আমি আরেকটি জিডি করেছি। গত ২৫এপ্রিল ও ৩ মে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় দুটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমি অসহায় বিধূবা স্ত্রীর রোজিনা সুলতানার বাড়িতে গিয়ে সার্বিক বিষয়ে খোজ খবর নিয়েছি। তাকে তার পরিবারেকে পূর্ন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি এবং তাকে ইফতারসহ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। জমাজমি নিয়ে আদালতে বিচারাধীন মামলা আদালতে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ন জমি কেউ ভোগ দখল করতে পারবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৌরনদীর সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ওসি) মোঃ অলিউল্লাহ, উপ-পরিদর্শক মোঃ কামাল হোসেন, সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক হোসেন মোল্লা, ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মেজবা উদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ।