গৌরনদী
রেড জোন কালকিনি থেকে ইয়োলো জোন গৌরনদীতে অবাধ যাতায়াত, অত্যাধিক ঝুঁকিতে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক, করোনাভাইরাসের সংক্রমন ও বিস্তার রোধে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলাকে গত ১৬ জুন রেড জোন ঘোষনা করে জেলা প্রশাসক। অস্বাভাবিকহারে সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় দুইদিন পরে পাশ্ববর্তি বরিশালের গৌরনদী উপজেলাকে ইয়োলো জোন ঘোষনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক। রেডজোন কালকিনি থেকে ইয়োলো জোন গৌরনদীতে অবাধ প্রবেশে কঠোর নির্দেশনা জারি করে বরিশাল জেলা প্রশাসক । কালকিনির সাথে বরিশালের সকল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। এর পরেও থামছে না রেডজোন কালকিনি থেকে ইয়োলো জোন গৌরনদীতে অবাধ যাতায়াত।
স্থানীয় লোকজন, ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনিতে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৬ জুন কালকিনিকে রেডজোন চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষনা করেন জেলা প্রশাসক। কালকিনির লোকজনের সংস্পর্শে গৌরনদীতে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই দিন পরে গৌরনদী উপজেলাকে ইয়োলো জোন ঘোষনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক। মাদারীপুরের কালকিনি ও বরিশালের গৌরনদীর প্রায় ১২টি সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয় গৌরনদী প্রশাসন। প্রতিটি সিমান্তবর্তী পথে বসানো হয় নিরাপত্তা চৌকি।
গৌরনদী উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির গৌরনদী উপজেলার সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাইয়্যেদ মোঃ আমরুল্লাহ জানান, গত রোরবার পর্যন্ত গৌরনদীতে ৫৬ জন ব্যক্তির করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছে দুইজন। মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলাকে ওই এলাকার প্রশাসন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যাপের কথা বলে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অথচ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন রেডজোন মাদারীপুর ও কালকিনির শত শত মানুষ ইয়োলো জোন গৌরনদীর বিভন্ন হাটবাজারে অবাধে যাতায়াত করছে। এতে গৌরনদীতে ব্যাপকহারে করোনার বিস্তার ঘটছে। একদিনে ১৫ জন রোগী শনাক্ত হওয়া নিয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন।
গতকাল সোমবার দুই জেলার সিমান্তবর্তি কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায় দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী যে সব স্থানে পুলিশী পাহারা বসানো হয়েছিল তার কোথায়ও কোথায়ও পাহারা নেই। ফলে রেড জোনের মানুষ অনায়াসে ইয়োলো জোনে যাতায়াত করছে । টরকীরচর সেতুতে বেরিগেট ভেঙ্গে অবাধে যাতায়াত করছে নারী-পুরুষ। এ ছাড়া সেতুর বেরিগেটের দুই পাড়ে ছোট যানবাহন চলাচল করে। যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার পরে তারা বেরিগেট ভেঙ্গে পায়ে হেটে যাতায়াত অব্যহত রেখেছে। গৌরনদীর পাল পাড়া খেয়াঘাটে দেখা যায় অবাধে চলছে পারাপার। এ সময় দেখা গেছে প্রতি ৩০মিনিটে খেয়ায় ৭০/৮০ জন মানুষ পার হচ্ছে। গৌরনদীর বন্দর খেয়াঘাটের একই চিত্র। ভূরঘাটা সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ পাহারা থাকলেও কোনভাবেই কালকিনি থেকে গৌরনদীতে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা মানছেন না সাধারন মানুষ। স্থানীয় জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০), খাঞ্জাপুর ইউনিয়র পরিষদের সাবেক সদস্য কামাল হোসেন (৫৪), ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম (৫৫) বলেন, প্রতিদিন পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে সীমান্তবর্তী ভুরঘাটা দিয়ে কালকিনি থেকে বরিশালের গৌরনদী ঢুকছে শত শত মানুষ। এ ছাড়া কালকিনির ডাসার, নবগ্রাম, শশীকর, বালীগ্রাম, মসজিদ বাড়ি ও গৌরনদীর বাকাই ও সমরসিংহ আমানাতগঞ্জ দিয়ে অবাধে বরিশাল প্রবেশ করছে মানুষ। এতে ব্যাপক হারে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা করছে গৌরনদীবাসী।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন, করোনার বিস্তার প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রেড জোনের অবাধ যাতায়াত ঠেকাতে পুলিশী চৌকি জোরদারসহ জরুরী পদক্ষপে নেওয়া হচ্ছে। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, রেড জোন থেকে কাউকে বরিশালে ঢুকতে দেয়া হবে না। এ সিদ্বান্ত বাস্তবায়নে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।