গৌরনদী
বিবেক বাজার, অভাবীরা নিচ্ছেন বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর তুলাতলা এলাকায় হতদরিদ্রদের জন্য গত ১১দিন ধরে বিবেক বোধে বাজার চালু করা হয়েছে। এই বাজারের দোকানে চাল, ডাল, আটা, আলু পিয়াজ, তৈলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ২২/২৫ ধরনের দ্রব্য রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ১০/১২ জন মানুষ প্রযোজনীয় খাবার বিনা পয়সায় নিচ্ছেন।
বিবেক বাজারের উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী এমদাদ হাওলাদার জানান, মহামারি করোনা কালীন সময়ে অভাবিদের খাদ্য সংকট দুরীকরনের লক্ষে পেট্রোবাংলার ডেপুটি ম্যানেজার ফেরদৌস হাওলাদার, কাতার প্রবাসী নুর ইসলাম ও দিদার হাওলাদারসহ তারা ৪জনে বিবেক বাজার নামে বিনা পয়সার দোকান চালুর সিদ্বান্ত নেন। তারা ৪জনে এক লাখ টাকার চাল, ডাল, আটা, আলু পিয়াজ, তৈলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ২২/২৫ ধরনের দ্রব্য দোকানে রাখেন। সেখান থেকে অভাবী যাদের ঘরে খাবার নেই তারা খাবার নিতে পরেবেন। লোভে নয়, প্রয়োজন নিন শ্লোগানকে ধারন করে নিজের বিবেক থেকে একদিনে যতটুকু প্রয়োজন অতটুকু খাদ্য সামগ্রী নিতে পারবেন। বিবেক বাজারের লক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাজে বিবেক বোধ জাগরণ ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ বাড়ানো। কমলাপুর গ্রামের অভাবী লোকজন প্রতিদিন এখান থেকে বিনা পয়সার খাবার নিচ্ছেন।আমরা এক লাখ টাকার সামগ্রী কিনে দোকানে রাখার পরে স্থানীয় বৃত্তবানসহ অনেক সমাজ সেবকগন এ কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে এগিয়ে এসে এখানে অনুদান দিচ্ছেন।গত ১১দিনে ১শত ৩০ জন এখার থেকে খাবার নিয়েছেন। তার মধ্যে অধিকাংশ নতুন হলেও কিছু লোক আছে যারা ১১দিনই খাবার নিয়েছে। তাদেরকে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এদের ব্যাপারে ভবিষ্যাতে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন এ বাজার থেকে বিনা পয়সায় ১০/১২ জন নিজের ইচ্ছামত প্রয়োজনীয় খাবার নিচ্ছেন। যার প্রয়োজন সে ইচ্ছমতই নিচ্ছেন। রোববার ব্যতিত সপ্তাহে ৬দিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কার্যক্রম পরিচালনার স্বেচ্ছসেবক সাব্বির হোসেন বলেন, আমরা ৪জন স্বেচ্ছসেবক আছি যারা বিষয়গুলোতে নজরে রাখি। কোন মাল শেষ হলে তা পুরন করি।স্বীয় বিবেককে জাগ্রত করার জন্য এ বাজার চালু হলেও কেউ কেউ অবিবেচকের মতই কাজ করছেন। তাদের এখনো বাধা দেয়া হচ্ছে না। পরীক্ষামূলক কাজ চলছে। তাই আগতনা নিজের ইচ্ছামতই সামগ্রী নিচ্ছেন।
বিবেক বাজার থেকে সুবিধা নেওয়া কমলাপুর গ্রামের ভ্যান চালক সোহেল হাওলাদার (৩২)জানান, কাজ করতে না পারায় তিনি দুই দিন বিবেক বাজার থেকে খাবার নিয়েছেন। তার ঘরে ৪ জন লোক সেই হিসেব করে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু নিয়েছেন। ভ্যান চালক শরিফুল হাওলাদার, দিন মুজর লাল মিয়া ফকির সুবিধাভোগী জানান, বিনা পয়সায় পাইলেই নিতে হবে বিষয়টি এ রকম নয়। কাজ না থাকলে চাল ডাল কেনার সামর্থ যেদিন থাকে না সেদিন নেই। আরেক উদ্যোক্তা ফেরদৌস হাওলাদার বলেন, যতদিন করোনা মহামারি থাকবে এ কার্যক্রম ততদিন অব্যহত থাকবে। কর্মহীন মানুষকে খাবার দেয়ার পাশাপাশি তাদের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই এ বিবেক বাজার চালু করা হয়েছে। বিষয়টিকে স্বগত জানিয়েছে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান। তিনি বলেন, করোনা সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারের পাশাপাশি এ ধরনের বেসরকারী উদ্যোগ মানুষের অভাবেক পুরন করতে সক্ষম হবে।