গৌরনদী
গৌরনদীতে সন্ত্রাসী হামলা, আহত-৭ মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ পূর্ব শত্রæতা ও মাদক ব্যবসার বাধা প্রদানকে কেন্দ্র করে গত শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের শিংগা গ্রামে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও তার সমর্থকদের হামলায় প্রতিপক্ষের ৭ আওয়ামীলীগ কর্মী জখম হয়েছে। আহতদের ৪ জনকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এজাহার, প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন, আহত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছর যাবত গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেনের বাটাজোর বন্দরস্থ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন বাটাজোর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আরেক সদস্য মোঃ আসলাম সিকদার (৫৩)। বাসা ভাড়া নেওয়ার পর থেকে অদ্যবধি কোন ভাড়া পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে মোতাহার হোসেন ও তার ছেলে মাহাবুব আলমের সঙ্গে প্রতিপক্ষ আসলাম সিকদারের বিরোধ চলে আসছিল। বিভিন্ন সময় বাসা ভাড়া চাইতে গেলে তালবাহানা করে আসলাম। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাহাবুব আলম বাটাজোর বাসষ্টান্ডে আসলাম সিকদারের কাছে বাসা ভাড়ার তাগাদা দিলে আসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগাল করলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে রাত সোয়া ৯টার দিকে শিংগা গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে।
মাহাবুব আলম (৪০) অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসী আসলাম সিকদার দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও জুয়ার আসর পরিচালনা করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে আমি ও আমার সমর্ধকরা এতে বাঁধা দেয়া ও বাসা ভাড়া নিয়ে তিন বছর ধরে ভাড়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে আসলাম সিকদার আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে আমি শিংগা গ্রামের নজরুলের দোকানের সামনে চা ক্ষেতে গেলে সন্ত্রাসী আসলাম সিকদারের নেতৃত্বে সহদর কালাম সিকদার, ওমর ফারুক আমার ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ খবর ছড়িয়ে পরলে আমার স্বজন ও সমর্থকরা আমাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে আসলাম সিকদার ১০/১২ জন শসস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে চাচাতো ভাই হারুন প্যাদা (৪৫), হাবিব হাওলাদার (৪৪), লতিফ সরদার (৪২), মুরাদ সরদার (৪৩), মিন্টু প্যাদা (৩৮) ও সোহাগ প্যাদাকে (৩৭) জখম করে। এ সময় আমার মটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহত ৪ জনকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানার জন্য আসলাম সিকদারকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বড় ভাই বাটাজোর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ কালাম সিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাসা ভাড়া দেয়না এ কথা সঠিক নয়, হয়েতো বকেয়া থাকতে পারে । মাহাবুব গংরা এলাকায় মাদক ও জুয়ার আড্ডা বসায় ছোট ভাই আসলাম এর প্রতিবাদ করায় বিরোধ তৈরী হয়। শনিবার রাতে মাহাবুব আলম ও তার সমর্থকরা ছোট ভাই আসলামের সমর্থক সুজনকে মারধর করে। পরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসি একত্রিত হয়ে মাহাবুব ও তাদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় সঙ্গে আমরা কেউ জড়িত নাই।
গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাসা ভাড়ার পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় আহত মাহাবুব আলমের স্ত্রী শামছুন নাহার বাদি হয়ে আসলাম সিকদার তার সহদর কালম সিকদার, ওমর ফারুক ও ইব্রাহিমের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে গতকাল রোববার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।