গৌরনদী
উজিরপুরে নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ কনষ্টবল ক্লোজ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার কনষ্টবল জাহিদুল ইসলামকে সোমবার বরিশাল পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হলেও বহাল তবিয়তে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল। নির্যাতিতা নারীর অভিযোগ ওসি শিশির কুমার পাল অভিযোগ প্রত্যাহারে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। সোমবার বরিশালের পুলিশ সুপার ডিআইজিকে বিষয়টি অবহিত করেন ওই নারী।
পুলিশের সাবেক এএসআই ও মাদারীপুর সদর উপজেলার পানিচত্বর এলাকার মৃত মোঃ মঈন উদ্দিন মাতবরের স্ত্রী রাশিদা বেগমের (৬২) কন্যা সপ্তম শ্রেনির ছাত্রী অপহরনের ঘটনায় থানায় একাধিক অভিযোগ দিয়ে কোন বিচার না পেয়ে ওসির বিরুদ্ধে বরিশাল ডিআইজির কাছে অভিযোগ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হন উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল। বুধবার সন্ধ্যায় ওসি তাকে থানায় ডেকে পাঠন। সন্ধ্যায় সে থানায় দেখা করতে গেলে চায়ের দোকানে বসতে বলেন। সেখানে গিয়ে থানার কনষ্টবল জাহিদুল ইসলাম ওই নারীকে থাপ্পর চোপারসহ মারধর করে এবং গালে সিগারেটের আগুন চেপে ধরে পুড়িয়ে দেয়। পুলিশ কনষ্টবলের হাতে মার খেয়ে ওসির কাছে বিচার দিতে গেলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে নারীকে গালাগাল করে ও দুই গালে থাপ্পড় দিতে দিতে রুম থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনায় বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা রয়েছে। তবে উজিরপুর মডেল থানা ও জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গতকাল সোমবার উজিরপুর মডেল থানার কনষ্টবল জাহিদুল ইসলামকে বরিশাল পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন কনষ্টবল জাহিদুল ক্লোজ হওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এদিকে নির্যাতিতা নারী অভিযোগ করে বলেন, আমি মার খেয়ে উজিরপুর থেকে চলে এসে বরিশালের গড়িয়ারপাড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছি। গত রোববার দুপুরে ওসি শিশির কুমার পাল, পুলিশ কনষ্টবল জাহিদুল ইসলাম কতিপয় সাংবাদিক, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে নিয়ে উপস্থিত হয়ে আমাকে গড়িয়ারপাড় বাসস্ট্যান্ডের একটি ক্লাব ঘরে ডেকে নেয়। সেখানে ওসি আমাকে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে ভয় ভীতি দেখায় আমি আমার সিদ্বান্তে অনড় থাকলে ওসি কৌশল পরিবর্তন করে টাকার প্রলোভন দেখান। বিনিময়ে বরিশাল পুলিশ সুপার ও বরিশালের ডিআইজির কাছে গিয়ে তারা (ওসি ও পুলিশ) নির্দোস কথাটি বলতে হবে। আমি বিষয়টি ডিআইজি ও পুলিশ সুপার স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ওসি থানায় বহাল তবিয়তে থেকে স্বাক্ষীদের হুমকি দেয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শী কেউ স্বাক্ষী দিতে রাজি হন না।
ক্লোজ হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ কনষ্টবল জাহিদুল ইসলাম কথা বলতে রাজি হননি। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, আমি এসব কিছুই জানি না।