গৌরনদী
তথ্য প্রযুক্তি আইনে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ব্যার্থ হয়ে প্রথম আলোর প্রতিনিধিসহ ৭ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহিরসহ ৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩ এর ৫৭(২) ধারায় অভিযোগ দিয়ে ব্যার্থ হন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা। অবশেষে ওই প্রভাবশালী নেতা স্কুল ছাত্রীকে পভাবিত করে সাংবাদিকদের জব্দ করতে বুধবার রাত পোনে একটায় গৌরনদী মডেল থানায় মানহানির একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে দৈনিক প্রথম আলোর গৌরৈনদী প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম, দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকা, বরিশালের কাগজ, আমাদের বরিশাল, দৈনিক সময়ের বার্তা, দৈনিক বরিশাল সময় ও দৈনিক সকালের বার্তার গৌরনদী নিজস্ব প্রতিবেদকদের। মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়েরের ঘটনায় বরিশাল, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও কালকিনিসহ সকল সাংবাদিক মহল গভীর উদ্বোগসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন, সাংবাদিক ও পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির এক নেতা ও ইউপি সদস্য কর্তৃক এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আটকে রাখার খবর এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সর্বত্র আলোচিত হয়। বিষয়টি জানার পরে গৌরনদীতে কর্মরত স্থানীয় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স, অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকার সাংবাদিকরা ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ওই বাড়িতে যান। স্থানীয় একাধিক সাংবাদিক জানান, এ খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় পরে গত ১ জুলাই স্কুল ছাত্রী বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি জহিরসহ ৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। গৌরনদী মডেল থানা অভিযোগপত্রটি সাধারন ডায়রী হিসেবে নথিভূক্ত করে ওই দিনই উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পুলিশ হেড-কোয়াটারের নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য অনুমতি চেয়ে পাঠান। পুলিশের একটি সুত্র জানায়, অভিযোগটি তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩ এর ৫৭(২) ধারায় বহিভুত হওয়ায় পুলিশ হেড-কোয়াটার থেকে অনুমতি দেয়নি।
বাদি এজাহারে উল্লেখ্য করেন, গত ২৯ জুন প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম তার বাড়িতে গিয়ে তার (বাদির) অনুপুস্থিতিতে স্বাক্ষীদের (স্কুল ছাত্রীর বাবা মা) সঙ্গে কথা বলেন এবং কোন সত্যতা না পেয়ে ফিরে আসেন। তদুপরি সাংবাদিক জহির বিশেষ মহলের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে নিজের হলুদ সাংবাদিকতার ধারা অক্ষুন্ন রেখে এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে মিথ্যা সংবাদ করে নিজের অনুগতদের দিয়ে ফেইসবুক ও পত্রিকায় প্রকাশ করিয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিক জহির পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটির ভিকটিম ও তার পরিবার স্বীকার না করায় আমি প্রথম অলোতে সংবাদ প্রকাশ করি নাই। যারা ফেইসবুক ও পত্র পত্রিকার সংবাদ প্রকাশ করেছে বাদি তাদের অভিযুক্ত করেনি। সম্প্রতি সময়ে প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে আমাকে জব্দ ও হয়রানী করতে প্রথমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩ এর ৫৭(২) ধারায় মামলা দিতে ব্যার্থ হয়ে অবশেষে স্কুল ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও প্রভাবিত করে তাকে দিয়ে আমাকেসহ ৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করিয়েছেন। মামলা দায়েরের ব্যাপারে বাদির কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তিতে বাদির পিতার কাছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথা মামলা দায়ের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাহি হননি। এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান খান বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার সকালে মামলার খবর সাংবাদিক মহলে ছড়িয়ে পড়লে বরিশাল, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও কালকিনিসহ সকল সাংবাদিকরা গভীর উদ্বোগসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।