গৌরনদী
ফলো আপ / গৌরনদীতে আধিপত্য নিয়ে আ.লীগ যুবলীগের সংঘর্ষ \ মামলার আসামি বিএনপির নেতাকর্মি
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম / আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল বাজারে যুবলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওযা পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫জন আহত হয়।এ ঘটনায় গত সোমবার আ.লীগ নেতার দায়ের করা মামলায় এক যুবলীগ নেতা ও ১৪ জন বিএনপি নেতাকর্মিকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ আগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হয়রানী ও এলাকাছাড়া করতে তাদের আসামি করা হযেছে।
দলীয় সূত্র স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা ও নারায়গঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের একান্তসচিব ও ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘ দিন বিরোধ চলে আসছিল। সর্বশেষ একটি নির্মাণকে কেন্দ্র করে গত সোমবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়।
গৌরনদী মডেল থানায় আ.লীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লার মারামারি ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় ১৬ জনের নামোল্লেখসহ ৪৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সরিকল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য খোকন মৃধা(৩৫)কে আসামি করা হয়েছে। এজাহার নামীয় ১৬ আসামির মধ্যে ১৫ জন বিএনপি নেতাকর্মি। নামোল্লেখিত আসামি বিএনপি নেতাকর্মীরা হলেন, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও শরিকল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর মৃধা, উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি কামাল হোসেন ওরফে বিপ্লব মুন্সী, উপজেলা যুবদলের সদস্য রনি মৃধা, লিমন খান, রানা মৃধা, দুলাল খান, সুমন মৃধা, সজীব খান, ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য ফারুক মৃধা, সাইদুল খান, ইউনিয়ন ছাত্রদল কর্মী লিটু মৃধা, পিয়াল, কিরন মৃধা, রাকিব মুন্সী, শিমুল হাওলাদার।
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও শরিকল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর মৃধা অভিযোগ করে বলেন, এলঅকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের একান্তসচিব ও যুবলীগের নেতা মো. হাফিজুর রহমামানের সঙ্গে সরিকল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। আহতরা সকলেই আ.লীগ যুবলীগ নেতাকর্মি। এ ঘটনা সরিকল বন্দরের শত শত ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষ দেখলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আমাদের দলের নেতাকর্মিকে আসামি করা হয়েছে। আগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আ.লীগ পরিকল্পিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মিকে হয়রানী ও আগামি নির্বাচনে এলাকাছাড়া করার উদ্দেশ্যে আমাদের নামে এ মামলা করা হয়েছে।
সাংসদের একান্তসচিব ও যুবলীগ নেতা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সরিকল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা ও তার ছোট ভাই ও সরিকল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সন্ত্রাসী মো. নাসির মোল্লা(৩৬)র নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যুবলীগ নেতা খোকন মৃধা ও তার সমর্থকদের ওপর ওপর হামলা চালিয়েছে । আ.লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আ.লীগ ও যুবলীগের নিজেদের মধ্যে সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মিকে আসামি করা সমচীন হয়নি। অভিযোগ অস্বীকার করে সরিকল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা বলেন, হয়রানীর উদ্দেশ্যে কাউকে মামলার আসামি করা হয়নি। বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর মৃধার নেতৃত্বে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা সরিকল বন্দরস্থ আমার ছোট ভাই নাসির মোল্লা চাউলের আড়তে ডাকাতি করে বাক্স থেকে দুই লক্ষ ৪০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। বাধা দিতে গেলে ছোট ভাই নাসির মোল্লাসহ ১০ জনকে কুপিয়ে জখম করেছে। ঘটনায় জড়িতদের মামলায় আসামি করেছি।
এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম বলেন, বাদি মামলা করেছে পুলিশ মামলা নিয়েছে। কে আ.লীগ আর কে বিএনপি তা বিবেচ্য বিষয় নয়। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যহারের দাবি জানিয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, নির্বাচনে বাইরে রাখতে বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে আটকে রাখা আ.লীগের নীল নকসা এবং গৌরনদীতে আ.লীগ -যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মিদের মামলায় আসামি করা একইসূত্রে গাঁথা।