গৌরনদী
চিকিৎসকের গাফলতি ও অবহেলায় উজিরপুরে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ চিকিৎসকের গাফলতি ও অবহেলায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাউয়ারেখা গ্রামের চার মাসের রিদিশা নামে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় বরিশালের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মারা যাওয়া শিশুর বাবা খোকন চন্দ্র হালদার বাদি হয়ে রবিবার বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট্রড আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক বিষয়টি তদন্তের জন্য বরিশাল পিবিআই পুলিশ নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত আসামিরা হলেন বরিশাল বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদার ও মো. নাইম হোসেন।
খোকন চন্দ্র হালদারের এজাহার ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২৭ ফেব্রæয়ারি তার শিশু কন্যা রিদিশা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বরিশালের সদর রোডের বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক শিশুটিকে সেখানে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি করে ৯দিন পর্যন্ত হাসপাতালে রাখেন। এ সময় চিকিসা সেবা প্রদানের নামে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে সময় ক্ষেপন করে সুচিৎসা না দিয়ে রোগীর প্রতি অযত্ব ও অবহেলা করেন। এতে শিশুটি আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়লে গত ১০ মার্চ বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে এ নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে বাদির বাকবিতাÐা ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে হাসপাতালের বিল বাবত ২৪ হাজার দুই শত বিশ টাকা বিল রেখে শিশুর নাম কর্তৃন করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন।
শিশু কন্যার বাবা খোকন চন্দ্র হালদার অভিযোগ করে বলেন, বাড়িতে আসার পরে শিশুর অবস্থার গুরুতর অবনতি ঘটলে ১২ মার্চ আমি চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারকে অবহিত করি এতে সে ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে আমাকে বলেন ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে যাবে এ নিয়া চিন্তার কোন কারন নেই। পরে শিশুটি সুস্থ্য না হওয়ায় আমি পুনরায় চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারকে জানালে সে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। দ্বিতীয় দফায় শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসক কোন খোঁজ খবর নেননি। এসময় ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মো. নাঈম হোসেনের শরনাপন্ন হই তিনি রোগীর প্রতি কোন গুরুত্ব না দিয়ে চলে যান। এ নিয়ে বাকবিতাÐার এক পর্যায়ে চিকিৎসক নাঈম চিকিৎসাপত্র দিয়ে আমাকে বলেন, এই চিকিৎসা ডা. আশীষ কুমারের পরামর্শে দেওয়া হল। পরবর্তিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। চিকিৎসক হয়ে আশার সঙ্গে খুবই আচরন করেছে। চিকিৎসকরা আমার সন্তানের প্রতি অবিচার করেছে। আমি এর বিচার চাই। দায়িত্বে গাফলতি ও অবহেলায় সন্তানকে হারাতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফার চিকিৎসাপত্র নিয়ে ঔষাধ কিনে হাসপাতালে পৌছার আগ্ ে১৩ মার্চ রিদিশা মৃত্যুর কোলে ঢলে পেড়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বরিশাল বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের চিকিৎসক মো. নাঈদ হোসেনকে মুফোফোনে কল করে তা বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদার বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম ওই রোগী সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমাকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। চিকিৎসক আশীষ কুমার হালদারের দাবি প্রত্যাখান করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, শিশু রিদিশা ১০ মার্চ পর্যন্ত আশীষ কুমার হালদারের অধীনে ভর্তি ছিলেন।