গৌরনদী
গৌরনদীতে শিশু স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের মামলায় বৃদ্ধা গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ইল্লা গ্রামে ৬ষ্ঠ শ্রেনির ছাত্রীকে জোর পূর্বক ধর্ষন করেছে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা কাজী আব্দুল আজিজ। ধর্ষিতার গর্ভপাত ঘটানো হলে শিশুটি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে লোক লজ্জায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ধর্ষিতা শিশু স্কুল ছাত্রী। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে পুলিশ সোমবার ধর্ষক বৃদ্ধাকে আটক করেছে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার গৌরনদী মডেল থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়েরের পর আটক বৃদ্ধাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে।
ধর্ষিতার পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ইল্লা গ্রামের মৃত একরাম কাজীর পুত্র কাজী আব্দুল আজিজ(৬৫) একই বংশের তার চাচাতো ভাইর ৬ষ্ঠ শ্রেনির ছাত্রী (১২)কে নিয়ে গত অক্টোবর মাসে তার (আজিজের) বোন বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভাল্লুকসী গ্রামে বেড়াতে যান। ওই রাতে বৃদ্ধা আব্দুল আজিজ তার দুসম্পর্কের ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়–য়া ভাতিজিকে নিয়ে একই পিছানায় ঘুমান। এসময় বৃদ্ধা আজিজ স্কুল ছাত্রীকে মুখ চেপে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। বিষয়টি কাউকে বললে স্কুল ছাত্রীকে হত্যার হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখালে ভয়ে স্কুল ছাত্রী ঘটনা কাউকে না বলে চুপ থাকে।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, আজিজ আমার চাচাতো ভাইর ছেলে। আজিজ আমার শিশু মেয়েকে বেড়াতে যাওয়ার লোভ দেখালে মেয়ে তার কাকার সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার বায়না ধরলে আমরা রাজি হয়ে বেড়াতে যাওয়ার অনুমতি দেই। বেড়াতে নিয়ে আজিজ মেযেকে ধর্ষন করলে সে অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পরে। গত জানুয়ারি মাসে গোপনে কালকিনির একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে মেয়ের গর্ভপাত ঘটানোর ঔষাধ সেবন করান আজিজ। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গর্ভপাত সম্পন্যের কথা বলে ঔষাধ সেবন করালেও গর্ভপাত হয়নি। এ ঘটনা পর্যন্ত আমরা কিছুই জানতাম না।
গত ফেব্রæয়ারি মাসের শেষের দিকে মেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রামসহ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান, মেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত¡া এবং তার পেটে একটি মৃত সন্তান রয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মেয়ে সব ঘটনা আমাদেরকে খুলে বলে। বিষয়টি জানাজানি হলে লোকলজ্জার ভয়ে ২ মার্চ স্কুল ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হয়। বিষয়টি শুনে লম্পট আজিজ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সোমবার সকালে আজিজকে খুজে বের করে মারধর করে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আজিজ সত্যতা স্বীকার করেন। সোমবার দুপুরে আজিজকে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। তিনি আরো বলেন, আমি পশু আজিজের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আর কোন সহজ সরল শিশু এ ধরনের নির্যাতনের শিকার না হয়। এ বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানা হাজতে থাকা কাজী আব্দুল আজিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিভাবে কি হয়েছে আমি বুঝতে পারছি না। ঘটনার জন্য আমি লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, এঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে বৃদ্ধা আজিজ কাজীকে আসামি করে গতকাল মঙ্গলবার একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেন। একই দিনে ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এবং গ্রেপ্তারকৃত আজিজকে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।