গৌরনদী
অপহরনের তিন দিন পর আগৈলঝাড়ার অপহৃত ইমাম উদ্ধার, এক অপহরনকারী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ছয়গ্রাম স্কুল এ্যা- কলেজ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. ইমরান(২০)কে অপহরনের তিন দিন পর আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ গত সোমবার সকালে একই উপজেলার ধরাধরের পাড়ের একটি জঙ্গল থেকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার থানায় অপহৃতার বাবা মো. হারুন আর রশিদ হাওলাদার বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে অপহরন মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিউল পাইক(২৪)র নামের এক অপহরনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপহৃতার পরিবার ও পুলিশ জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. হারুন অর রশিদের পুত্র ও বেলুহার নেছারিয়া আলীম মাদ্রাসার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফেজ মো. ইমরান(২০) গত কয়েক বছর যাবত উপজেলার ছয়গ্রাম স্কুল এ্যা- কলেজ জামে মসজিদের মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মসজিদের কয়েকজন মুসল্লী জানান, তারা শনিবার রাতে ইমামের পিছনে এশার নামাজ আদায় করেন। প্রত্যুষে ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করতে এসে নামাজের ওয়াক্ত পার হয়ে গেলেও ইমাম মসজিদে না আসায় তাকে ডাকাডাকি করে পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে খুজতে মসজিদ সংলগ্ন কক্ষে যান। সেখানে দরজা খোলা থাকলেও ইমাম ইমরানকে কক্ষে পাওয়া যায়নি। অপহৃত ইমাম ইমরানের বাবা মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার জানান, রবিবার স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করে ইমরানকে না পেয়ে রবিবার আগৈলঝাড়া থানায় তিনি একটি সাধারন ডায়রী করেছি।
উদ্ধারের পর অপহৃতা ইমাম ইমরান জানান, শনিবার রাতে এশার নামাজ আদায় করে প্রতিদিনের ন্যায় রাত ১০টায় মসজিদ সংলগ্ন কক্ষে ঘুমাতে যান। ওই রাত দেড়টার দিকে মধ্য বয়সী অজ্ঞাতনামা দুই যুবক তাকে ডেকে তোলেন এবং দরজা খুলতেই ওই দুই যুবক কাপর দিয়ে তার চোখ, মুখ, হাত বেধে তাদের সংঙ্গে হেটে কিছুদুর নিয়ে যায়। সেখানে পৌছার পরে আরো কয়েকজন যুবক একত্রিত হয়ে তাকে মটরসাইকেলে তুলে অপহারন করে নিয়ে যান। কিছু সময় গাড়ি চালানোর পরে তাকে মটরসাইকেল থেকে নামিয়ে একটি পাকা ভবনের দ্বীতীয় তলায় একটি কক্ষে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে অপহরনকারীরা তাদের মুঠোফোন দিয়ে তার বাবা হারুন অর রশিদের সঙ্গে কথা বলিয়ে তাকে ফিরে পেতে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন নিয়ে আসার অনুরোধ জানান এবং বিষয়টি পুলিশসহ কাউকে বললে ক্ষতি হওয়ার ভয়ভীতি দেখান। অপহৃতা বলেন, বাবায় টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। রড দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে দেয়। আমি চিৎকার করলে বাড়ির মালিক টের পান। আমাকে আটকে রাখা কক্ষে এসে বাড়ির মালিক আমাকে ওখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। না গেলে লোকজন ডাকার ভয় দেখালে অপহরনকারীরা আমাকে তুলে নিয়ে একটি জঙ্গলে যান। সেখানে সোমবার সরা রাত পর্যন্ত আটকে নির্যাতর করেন।
আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা জানান, অপহৃতার বাবার সাধারন ডায়রীর সূত্র ধরে তথ্য পযুক্তি ও মুঠোফোন ট্রাকিং এ মাধ্যমে সোমবার সকালে একই উপজেলার ধরাধর দীঘিরপাড়ের একটি জঙ্গল থেকে ইমাম ইমরানকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি (ওসি) বলেন, অপহরনের ঘটনায় অপহৃতার বাবা মো. হারুন অর রশিদ বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনকে আসামি করে গতকাল মঙ্গলবার আগৈলঝাড়া থানায় অপহরন মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার ছয়গ্রাম গ্রামের আবুল কাসেম পাইকের পুত্র মো. রবিউল পাইক(২৪)কে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনায় জড়িতঅন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।