গৌরনদী
গৌরনদীতে কাজ না করে আড়াই কোটি টাকার বিল উত্তোলন
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার এলজিইডির মেমার্স তামিম এণ্টারপ্রাইজের মালিক মো. আফজাল হোসেন গৌরনদী উপজেলা সদরের গৌরনদী বাসষ্টা- এলাকায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম নামে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মানের কার্যাদেশ পান। ঠিকাদার কোন বিন্দুমাত্র কাজ না করে আড়াই কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেছেন।
স্থানীয় লোকজন, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলা সদরে গৌরনদী বাসষ্টা- এলাকায় ১৯৭৯ সালে খুলনা উন্নয়ন কর্পোরেশন একটি অডিটোয়িাম নির্মান করেন। প্রথম দিকে অডিটোরিয়ামটি বিভিন্ন রাজনৈতকি ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজে ব্যবহার করা হত। পরবর্তিতে ১৯৯৮ সালে অডিটোরিয়ামের নিজতলায় গৌরনদী হাইওয়ে থানা স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল এলজিইডি বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পে (এডিবি)র ২০১৬-২০১৭ইং অর্থ বছরে পুরাতন অডিটোরিয়াম ভেঙ্গে ওই স্থানে ৫শ আসন বিশিষ্ট শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়াম নামে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণের প্রকল্প গ্রহন করেন। ৭ কোটি ১৬ লক্ষ ১১ হাজার ২৪৮ টাকা প্রকল্পটির প্রাককলন তৈরী করা হয়। গত এপ্রিল মাসে দরপত্র আহবান করা হয়। সমজোতার ভিত্তিতে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ঠিকাদার মেসার্স তামিম এণ্টারপ্রাইজের মালিক নিজের অধীনে থাকা তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে দরপত্র জমা দেন। গত এপ্রিল মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সর্ব নিন্ম দরদাতা হিসেবে শতকরা ১০ ভাগ বেশী দরে মেসার্স তামিম এন্টারপ্রাইজকে ৭কোটি ৮৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৪০ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন ভবনটির নিচতলায় গৌরনদী হাইওয়ে থানার কার্যক্রম চলছে। এক পাশে থানার অফিশিয়াল কার্যক্রম ও আরেকপাশে পুলিশের বসবাস। এসময় স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনো কোন বিন্দুমাত্র কাজ করেন নাই। গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা অফিস ভাড়া নিযেছি সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কিন্তু একনো এখানেই আছি।
গৌরনদী উপজেলা এলজিইডির অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তামিম এণ্টারইজের মালিক মো. আফজাল হোসেন ক্ষমতাসীনদলের প্রভাবশালী নেতার মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে কোন কাজ না করে শতকরা ৩০ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে গত ২২ জুন আড়াই কোটি টাকার দিতে আমাদেরকে বাধ্য করেছে। গৌরনদী উপজেলা হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারেক বিল প্রদানের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ২২ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তামিম এণ্টারপ্রাইজের অনূকূলে আড়াই কোটি টাকার বিল প্রদান করা হয়েছে।
কাজ না করে বিল উত্তোলন সম্পর্কে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আফজাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রকল্প তদারকি কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান আড়াই কোটি টাকা বিল প্রদানের কথা স্বীকার করে বলেন, কোন চাপে নয় কাজের স্বার্থে বিল প্রদান করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী ফজল আহম্মেদ বলেন, ঠিকাদারকে কোন বিল প্রদান করা হয়নি।