গৌরনদী
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মৃত্যু, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, গৌরনদী মডেল থানার চার পুলিশ প্রত্যাহার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের উত্তর ভাল্লুকসী গ্রামে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর জন্য গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক সিকদারসহ চার পুলিশকে দায়ি করে বিক্ষোভ মিছিল করে করেছে এলাকাবাসি । এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এসআইসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরিশাল পুলিশ লাইনে প্রত্যহার করে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যহার করে নেওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক সিকদার, কনস্টবল ইসমাইল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও পিক-আপ চালক জিহাদ হোসেন। তারা শুক্রবার সকালে গৌরনদী মডেল থানা ত্যাগ করে বরিশাল পুলিশ লাইনে যোগদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ও তদন্ত কমিটির সদস্য শারমিন সুলতানা রাখী বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর ভালুকশী গ্রামে পুলিশের তারা খেয়ে রফিক হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহানকে আহবায়ক তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। এসআই আব্দুল হক সিকদারসহ চার পুলিশকে বরিশাল পুলিশ লাইনে প্রত্যহার করে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও নিহত পরিবারের অভিযোগ, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভালুকশী গ্রামের নিজাম উদ্দিন ফকিরের চায়ের দোকানের পিছনের পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ে বসে মঙ্গলবার দুপুরে তাস খেলছিলেন স্থানীয় ইকবাল মৃধা, আলামিন মৃধা, জামাল মৃধা ও ফরিদ মৃধা। এ সময় খেলা দেখছিল স্থানীয় লোকজন। ওই সময় ওই পথ দিয়ে ভাল্লুকসী বাজারে যাচ্ছিল গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিধর্শক (এসআই) আব্দুল হক সিকদারসহ একাধিক টহল পুলিশ। স্থাণীয়রা জানান, এসআই আব্দুল হক তাস খেলতে দেখে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে আকস্মীকভাবে ধাওয়া করে। এ সময় তাস খেলোয়ার ও দর্শকরা আতংকিত হয়ে পুলিশের ভয়ে আত্মরক্ষার দৌড়ে পালাতে চেস্টা করে। সকলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে উত্তর ভাল্লাুকসী গ্রামের মন্নাত হাওলাদারের ছেলে ছুটিতে আসা বিদেশ ফেরত (প্রবাসী) মো. রফিক হাওলাদার (৪৫) দৌড়ে পাট ক্ষেত ও রাস্তা অতিক্রম করে কাজী মন্নানের বাড়িতে গিয়ে অচেতন হয়ে পরে। স্থাণীয়ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে বিকেল সাড়ে ৪টায় গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। রফিকের স্বজন উত্তর ভাল্লাকুসী গ্রামের শাকিল সরদার অভিযোগ করে বলেন, এসআই আব্দুল হক গৌরনদী থানার পুলিশ হয়ে বিনাঅনুমতিতে আগৈরঝাড়া এলাকায় ঢুকে আমাদের অহেতুক ধাওয়া করে আতংক সৃষ্টি ও মারধর করেছে। দৌড়ে পালাতে গিয়ে রফিক হাওলাদার অসুস্থ্য হয়ে মারা যান। অভিযোগের ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক সিকদার ধাওয়া করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই দিন আমি ভাল্লুকসী এলাকায় যাইনি। তাছাড়া পুলিশ দেখে যদি কেউ পালাতে গিয়ে মরে যায় তাতে পুলিশের কি করার আছে।