গৌরনদী
গৌরনদীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতন, মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল গ্রামে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মাগুড়া পূনিয়াকান্দি গ্রামের মুজাম চকিদারের কন্যা মনিকা আক্তারের (২০) তিন বছর পূর্বে একই উপজেলার কটকস্থল গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার পুত্র জুয়েল মোল্লার (২৬) সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন না যেতেই স্বামী জুয়েল মোল্লা বিদেশে যাওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করে। স্ত্রী যৌতুক এনে দিকে অস্বীকার করায় তার উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
নির্যাতিতা মনিকা আক্তারের মা ববিতা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বিবাহর পর থেকে জামাতা জুয়েল মোল্লা বিদেশে যাওয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় জামাতা জুয়েল মোল্লা, শ^াশুড়ি সুফিয়া বেগমসহ বাড়ির লোকজন মেয়ে মনিকাকে মাঝে মধ্যেই শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সালিস বৈঠকের পর সাময়িকভাবে চুপ থাকলেও কিছুদিন পর পর মনিকার উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। গত মঙ্গলবার যৌতুকের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা আনার জন্য মনিকাকে বাড়ি যেতে বলে। মনিকা টাকা আনতে বাড়ি যেতে অস্বীকার করলে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার স্বামী জুয়েল মোল্লা, শ^াশুড়ি সুফিয়া বেগম ওড়না দিয়ে মুখ বেধে ঘরের আটকে লাঠিপেটা করে নির্মম নির্যাতন চালায়। বাড়ির লোকজন ফোন দিয়ে মেয়ের অসুস্থ্যতার কথা আমাকে জানান। আমি মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে গ্রামবাসির সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করে ওই দিন বিকেলে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। বর্তমানে মনিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরুী বিভাগের চিকিৎসক বলেন, মনিকাকে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্তা জখম করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনিকা অভিযোগ করে বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার স্বামী ও শ^াশুড়ি মিলে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। এর আগে আমাকে লাকড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে জখম করে এবং টেনে আমার মাথার চুল ছিড়ে ফেলে। আমার আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা মাকে খবর দিলে মা এসে প্রতিবেশীদের নিয়ে আমাকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে একাধিকবার ফোন করলে জুয়েল মোল্লার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধু মনিকার মা ববিতা বেগম বাদি হয়ে জামাতা জুয়েল মোল্লা তার মা সুফিয়া বেগমের নাম উল্লেখ করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।