গৌরনদী
৯ বছর আগে হত্যার পর লাশ গুমের কিশোরকে আদালতে সোপর্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কিশোরকে অপহরন করে হত্যার পর লাশ গুম কিশোরকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক মোঃ আবু শামীম আজাদ ভিকটিমকে নিজ জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করে এবং ভিন্ন একটি অপহরন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি হিসেবে শোন এরেষ্ট দেখিয়ে তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রাম থেকে ৯ বছর আগে অপহরন করে হত্যা ও লাশ গুম হওয়া ভিকটিম রাসেল মৃধাকে (২৩) সোমবার ঢাকা যাত্রাবাড়ি থেকে উদ্ধার করে ে মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করতে ভিকটিমকে নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে রওয়ানা হন। ওই দিন বরিশাল না গিয়ে মাঝ পথ থেকে ভিকটিমকে থানায় ফেরত নিয়ে যান এবং ওই দিন আদালতে সোপর্দ না করে নানান নাটকীয়তার শেষে বুধবার ভিকটিম রাসেল মৃধাকে আদালতে হাজির করে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ আবু শামীম আজাদ ভিকটিমকে নিজ জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন এবং ভিন্ন একটি অপহরন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি হিসেবে শোন এরেষ্ট দেখিয়ে রাসেল মৃধাকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
মিথা মামলায় জেল হাজত থেকে সদ্য জামিনে বের হওয়া মোঃ মবিন ভূইয়া অভিযোগ করে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ ফোরকান হোসেন মিথ্যা মামলার বাদির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সঠিক তদন্ত ছাড়াই ১৩জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েই খেন্ত হননি। তিনি ভিকটিমকে নিয়ে নানান নাটকের জন্ম দিয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগপত্র দেয়ার পরে আমাদের সহায়তায় ভিকটিম উদ্ধার করা হলেও ভিকটিমকে ছেড়ে দিতে পুলিশ বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ ফোরকান হোসেন ভিকটিম উদ্ধার হওয়ার পরেও এখনো আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে ষরযন্ত্র করছে। আসামি রহমান মৃধার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, গত ৯ বছরে দারোগা ফোরকান আমাদের হয়রানী ও অমানবিক মানুষিক নির্যাতন করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফোরকান হোসেন আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, জমাজমি বিরোধের জের ধরে নলচিড়া মাধ্যমিক বিদ্রালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র ও কলাবাড়িয়া গ্রামের জালাল মৃধার ছেলে রাসেল মৃধাকে আসামিরা ৩ এপ্রিল অপহরন করে হত্যা করিয়া লাশ গুম করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফোরকান হোসেন বলেন, মামলার তদন্তকালে স্বাক্ষীর কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতেই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। উদ্ধারের পর ভিকটিমকে ছেড়ে দেওয়ার পায়তারা কিংবা নিজেকে রক্ষায় ভিকটিমকে নিয়ে ষরযন্ত্রের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আসামিরা মিথ্রাচার ছড়াচ্ছে। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দীন এ প্রসঙ্গে বলেন, গুম মামলার আসামিদের সহায়তায় ৯ বছর পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের মোঃ জালাল মৃধার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৪৫) ২০১২ সালের ৩ মে গৌরনদী মডেল থানায় তার ছেলে রাসেল মৃধাকে (১৪) অপহরন করে হত্যার পর লাশ ঘুমের একটি মামলা করে। মামলায় একই গ্রামের প্রতিবেশী এস. রহমান মৃধা (৫৫) তার ছেলে আরমান মৃধা (২৬), ছোট ছেলে রায়হান (২৩), স্থানীয় শাহীন মল্লিক (৩০), হক ভূইয়া (৭০) ও তার ছেলে মবিন ভুইয়া (২৮)সহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৩ সালে শেষের দিকে এজাহারভুক্ত ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।