গৌরনদী
টরকী বন্দরে ডাকাতির ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তার-২
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে ঐতিহ্যবাহি টরকী বন্দরে শনিবার রাতে দূধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় সোমবার দুপুরে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। টরকী বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মানিক সাহা (৩৯) বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। পুলিশ গৌরনদী উপজেলার বড় কসবা ও টরকীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। ডাকাতির পর টরকী বন্দরে ব্যবসায়ী আতংকে রয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন জানান, শনিবার রাতে টরকী বন্দরে ডাকাতির ঘটনায় বন্দরে বিশিস্ট ব্যবসায়ী ও সন্দরদী মহল্লার গোবিন্দ সাহার পুত্র মানিক সাহা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে সোমবার দুপুরে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ সোমবার গৌরনদী উপজেলার টরকীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের মৃত তাজেম আলীর পুত্র আলী হোসেন (৪২) ও বড় কসবা মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ওই মহল্লার বাবুল ফকিরের পুত্র আরিফ ফকিরকে (২৬) ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা থানার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যহত রয়েছে। সোমবার সকালে টরকী বন্দরে গিয়ে দেখা গেছে বন্দরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের নিরবতা ও আতংক কাজ করেছে। পুরো দিনটিই ব্যবসায়ী জিমিয়ে কাটিয়েছে বলে তারা জানান। টরকী বন্দর বনিক সমিতির সহ-সভাপতি ও মন্দির কমিটির কমিটর সভাপতি অমর কৃঞ্চ রায় বলেন, স্মরনকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখনো এক ধরনের আতংঙ্ক দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা অনেকেই দোকান বন্ধ করে ঝিমিয়ে দিন কাটাচ্ছে। ডাকাতির পর থেকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা স্ব স্ব বাড়িতে চলে যান।
বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, শনিবার রাত তিনটার দিকে ২০/২৫ জনের ডাকাতদল তার দোকানের সার্টার ভেঙ্গে ৫/৬ জন দোকানের ভিতরে ঢুকে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেধে ফেলে। এক পর্যায়ে সিন্দুকের চাবি নেওয়ার জন্য একাধিক ডাকাত তাকে মারধর করেছে। পরে সিন্দুকের চাবি নিয়ে ঘরে থাকা ১০ লাখ টাকা ও ৩২ কাটুন সিগারেট লুট করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া রায় পট্রি, ভূষি পট্রি, ব্যাংক পট্রির আরো ১২টি দোকানে ডাকাতি করে। ডাকাতদের মধ্যে ১৩/১৪ বছর বয়সি কিশোর ও ৫০ বছর বয়সী ডাকাত ছিল যারা স্থানীয় ভাষায় কথা বলেছে। তাদের পরনে ছিল প্যান্ড ও বিভিন্ন রঙের গেঞ্জি। ডাকাতদের দেখিলে আমিসহ (বাদি) স্বাক্ষীরা অর্থৎ ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা চিনতে পারবো। ডাকাতরা বন্দরে ঢুকেই নৈশ প্রহরী আলী আকবর ও কালাম সরদারসহ ভ্যান চালক ও পথচারীকে বেধে রাখে। ডাকাতির করে যাওয়ার সময় পূর্ব দিকে নদীর পাড়ে চলে যায়। ডাকাতি মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ কামাল হোসেন বলেন, ডাকাতির সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
উল্লেখ, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে টরকী পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে টরকী বন্দরে মুখোশ পড়া অস্ত্রধারী ৪৫/৫০ জনের ডাকাত দল টরকী বন্দরে উত্তরপূর্ব প্রান্তে বড় ব্রীজের উপর ও টরকী বন্দরের ভিতরে দুটি চেক পোষ্ট বসিয়ে ডাকাতি সংগঠিত করে। ডাকাতরা বন্দরে প্রবেশ করে ডাকাত টরকী বন্দরের রায় পট্রি ৬টি, মন্দির গলি ৫টি ও মধ্য চরে ২টি দোকানের তালা বিশেষ যন্ত্র দ্বারা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ ফিল্মি ষ্টাইলে ডাকাতি করে প্রায় নগত প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় ডাকাত দল প্রায় ৪০ জন নাইট কোচ যাত্রী, রাতে আগত মাছ ব্যাবসায়ী ও পথচারী রসি দিয়ে বেধে রাখে ।