প্রধান সংবাদ
উজিরপুরে যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে নির্যাতন, মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামে দাবিকৃত যৌতুকের দুই লাখ টাকা না পেয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন এক গৃহবধূকে অমানবিকভাবে নির্যাতর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও স্বজনদেরকে আসামি করে উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন, নির্যাতিতা অভিযোগ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মাস পূর্বে বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের পান্নু মল্লিকের ছেলে হৃদয় মল্লিকের (২৫) সঙ্গে একই গ্রামের মৃত কুদ্দুস ফকিরের মেয়ে মিতু আক্তারের (১৯) সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পিতৃহীন কন্যার নানা ইউসুফ মোল্লা ও স্বজনরা বর হৃদয় মল্লিককে যৌতুক হিসেবে নগত এক লাখ টাকা, স্বর্নালংকার ও আসবাবপত্রসহ প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল দেন। বিয়ের পরে কিছু দিন না যেতেই স্বামী হৃদয় নানা ইউসুফ মোল্লার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আনার জন্য মিতুকে চাপ দেয়। সে নানার কাছ থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে প্রায়ই মারধর করে।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মিতু আক্তার জানান, বিয়ের এক মাস পর থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্বামী হৃদয় ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১১ আগষ্ট সকালে স্বামী হৃদয় মল্লিক তার নানার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আনার জন্য বলে। সে টাকা আনতে অস্বীকার করলে এ নিয়ে ঝগরাঝাটি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। মিতু অভিযোগ করে বলেন, ওই দিন (১১ আগষ্ট) দুপুর দুইটার দিকে স্বামী হৃদয় মল্লিক, শ্বশুর পান্নু মল্লিক, শাশুরী মারুফা বেগম (৪০) টাকার জন্য আমাকে বেদনভাবে পিটিয়ে গুরুতরভাবে জখম করে। এক পর্যায়ে খুন্তি গরম করে ছ্যাকা দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। আমার ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন আমার নানার কাছে খবর দিলে নানা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতার নানা ইউসুফ হোসেন মোল্লা বাদি হয়ে স্বামী হৃদয় মল্লিক, শ্বশুর পান্নু মল্লিক, শাশুরী মারুফা বেগম (৪০) ও আত্মীয় মামুন হাওলাদারকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।