প্রধান সংবাদ
গৌরনদীতে দশ টাকা কর্মসূচীর চালে মাপে কম দেওয়ার অভিযোগে চাল বিতরন স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত দশ টাকা মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরন কর্মসূচী বাস্তবায়নে গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নে জনৈক জহিরুল ইসলামকে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়। চাল বিতরনে মাপে কম দেওয়ার অভিযোগে বুধবার দুপুরে চাল বিতরন স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় লোকজন, সুবিধাভোগী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকল্পে সরকারি বিতরন ব্যবস্থার আওতায় পল্লি অঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য ২০১৬ সালে সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন। নলচিড়া ইউনিয়নে তালিকাভূক্ত ৭৭৫ জন সুবিধাভোগী রয়েছে। ওই বছর (২০১৬) ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রমের আওতায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি করে চাল বিতরন করা হয়ে আসছে। শুরু থেকে নলচিড়া ইউনিয়নে চাল বিতরনে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয় ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেনকে। ২০১৬ সালে ২৮ অক্টোবর চাল বিতরনে মাপে কম দেওয়ার অভিযোগে, কর্মসূচীর নীতিমালা ভঙ্গ এবং অঙ্গীকারনামার ৬ ও ১০ নং শর্ত ভঙ্গে, নীতিমালার ৮(খ) নং অনুচ্ছেদ এবং অঙ্গীকারনামার ১১ নং শর্ত মোতাবেক জাকির হোসেনের ডিলারশীপসহ তার জামানাত সরকারি খাতে বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরবর্তিতে রাজনৈতিক তদবিরে জাকির হোসেন নিজের নাম পরিবর্তন করে তার ছোট ভাই জহিরুল ইসলামের ডিলারশীপ নেন।
সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করেন, বুধবার থেকে ইউনিয়নে মার্চ মাসের চাল বিতরন শুরু হয়। সকাল থেকে ৩০ কেজির স্থলে ২৬ থেকে ২৮ কেজি করে চাল দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সুবিধাভোগীরা। মাপে কম দেওয়ার বিষয়টি ভূক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট ট্যাগ কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গোলাম হাফিজ মৃধা বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর সুবিধাভোগীরা বিভিন্ন সময় এসে মাপে কম দেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানান। ডিলারের বিরুদ্ধে কার্ডধারীদের অভিযোগ সম্পর্কে আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। নলচিড়া ইউনিয়নের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনিতা রানী মজুমদার বলেন, মাপে কম দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমি অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে বিষয়টি উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক অশোক কুমার চৌধুরীকে জানাই। অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, আমি ও উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পাল ঘটনাস্থলে গিয়ে চাল পরিমাপ করি। চাল পরিমাপ করে প্রতি বস্তায় ২৭/২৮ কেজি করে চাল পাওয়া যায়। পরবর্তিতে তাৎক্ষনিতভাবে চাল বিতরন বন্ধ করে দিয়েছি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর উপজেলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা নাসরিন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি বরিশালে জেলায় একটি সভায় আছি, বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি কতিয়ে দেখে ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।