Gournadi24.com
গৌরনদী ২৪ ডটকম | logo
ঢাকা, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • প্রচ্ছদ
    • প্রধান সংবাদ
    • গৌরনদী
    • বরিশাল
    • সারাদেশ
    • খেলা
    • বিনোদন
    • সম্পাদকীয়
    • বাংলা কনভার্টার
    • ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
    • প্রচ্ছদ
    • প্রধান সংবাদ
    • গৌরনদী
    • বরিশাল
    • সারাদেশ
    • খেলা
    • বিনোদন
    • সম্পাদকীয়
    • বাংলা কনভার্টার
    • ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
    মেনু

    গৌরনদী

    বড়ই চাষে ভাগ্য বদল, অনুসারনে ৩৫ পরিবারের সাফল্য

    | ০৭:৪৬, মার্চ ১০ ২০১৯ মিনিট


    জহুরুল ইসলাম জহির, গোপালগঞ্জ, রামশীল থেকে থেকে ফিরে
    বরিশালের গৌরনদী বাসষ্টান্ডে ফুটপাতে বসে বরই বিক্রি করছিল এক যুবক। বাজারে ভাল মানের বড়ই ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও ওই যুবকের বড়ই একশত টাকা কেজি দরে লুফে নিচ্ছেন ক্রেতারা। কিছুক্ষন দাড়িয়ে বিষয়টি দেখার পরে যুবকের কাছে কারন জানতে চাইলে সে জানালেন অন্য এক বাংলাদেশের গল্পের কথা। শ্রম ও মেধাকে কাজে সরকারি সহায়তা ছাড়াই হতদরিদ্র থেকে অর্ধকোটে সম্পদের মালিক হওয়ার একটি গল্প। ওই পথ ধরেই গ্রামের ৩৫ স্বাবলম্বি হওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে প্রত্যন্ত বিল হিসেবে রামশীল ইউনিয়নের জহরকান্দি গ্রামে। বড়ই চাষী মনিমোহন এলাকার মডেল, তাকে অনুসরন করেই বদলে গেছে গ্রামের চিত্র। স্বাবলম্ভী ৩৫ পরিবার ছাড়াও গ্রামের অনেকেই বড়ই বাগান করার উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

    বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সার হাট থেকে ৭কিলোমিটর উত্তরের সিমান্তবর্তি রামশীল ইউনিয়নের জহরকান্দি গ্রাম। প্রত্যন্ত পল্লির বিল হিসেবে খ্যাত এলাকার মানুষের অভাব, অনাটনই ছিল নিত্যদিনের সঙ্গি। এক সময়ে অশিক্ষা- কু-শিক্ষার ছোয়ায় ভরপুর এ গ্রামটির মানুষ এক মুঠো ভাতের যোগার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ তাদের স্বপ্ন। গ্রামের মৃত মধু সুদন রাযের পুত্র মনি মোহন রায়কে ঘিরেই জেগে উঠেছে জহরকান্দি গ্রামের মানুষ। তারা স্বাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি সন্তানদের লেখা পড়ার উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

    মনি মোহন রায় জানান, তার অভাবি সংসারে বিলের শাপলা কুড়ানো ও দিন মজুরের কাজ করেই কোন রকম দিন কাটছিল । ২০০২ সালে তিনি (মনি মোহন) স্ত্রীর বড় ভাই অরুন ঢালীর কাছে মাগুরা বেড়াতে যান। সেখান থেকে রাজশাহীর আপেল কুলের দুটি কলম কিনে বসত ঘরের সামনে লাগান। ২/৩ বছর পরেই তাতে প্রচুর ফল ধরে। যা খাওয়ার পরেও বিক্রি করেন। ভাল ফলন পেয়ে তিনি আরো গাছ বাড়ানোর জন্য নিজ উদ্যোগে গ্রাফটিকস কলম কেটে ১০টি গাছ বৃদ্ধি করলেন। ওই গাছে ফল ধরার পরেই তিনি বড়ই চাষকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। শুরু হল বড়ই চাষ অবলম্বন করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন। ২০০৮ সালে পৈত্রিক ২০শতাংশ জমিতে পুকুর করে পুকুরের চারিপাশে আপেল কুলের কলম লাগান। সেই কুল বিক্রি করেই তার ভাগ্যের পরির্বতন করেন মনি মোহন। কুল চাষের আয় দিয়েই ধীরে আশপাশের জমি ক্রয় করে বাগানটি বড় করার পরিকল্পনা করেন। জমি ক্রয় করে পরিকল্পনামত ১৫৬ শতাংশ জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করেছেন। পুকুরের পাড়ে ৮০ নারিকেরী কুল, আপেল কুলের বাগান করে বড়ই চাষ করেন। প্রতিবছরই গ্রাফটিকস কলম করে বাগান বৃদ্ধি করে চলছেন।

    তিনি বলেন, আমি, স্ত্রী শিমুল রায় ও পুত্র বধূসহ নিজেরই বাগানের পরিচর্চা করে থাকি। এবং ছেলে বাসুদেব রায় বিভিন্ন বাজারে ঘুরে বড়ই বিক্রি করে থাকে। বাড়িতে বসে পাইকারী বিক্রি করলে ৬০/৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর বাজারে নিজেরা বিক্রি করলে ৯০/১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা যায়। তাই ছেলে বাসুদেব বাজারে বড়ই বিক্রি করে। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বড়ই বিক্রি হবে। আমার বাগানের বড়ই চাষে কোন কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। তাই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত বড়ই স্বাদ বেশী হওয়ায় বাজারের এর চাহিদা বেশী। চলতি মৌসুমে বড়ই বিক্রি করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করি। বর্তমানে আমার বাগানের পরিধি ২শত শতাংশ জুড়ে। বাগানে যুক্ত হয়েছে লিচু ও আম বাগান। এ ছাড়া নিজের জমিতে ধান চাষ করেই বছরের খোরাক হয়।

    মনি মোহনের ছেলে বাসুদেব রায় বলেন, আমরা বড়ই চাষের পাশাপাশি থাই বেদানা, বাজশাহী, দিনাজপুরী, সাতক্ষিরা, কদমী, চায়না থ্রি, মোজাফফরপুরী, বোম্বের বেদানা, বোম্বাই লিচুসহ ১৪ প্রজাতির লিচুর বাগান করেছি। তাতে এ বছর প্রচুর ফুল ধরেছে। আম বাগানে রয়েছে কিউজাই, পালমাই, গৌরমতি, নেংড়া, হিমসাগর, বাড়িফোর, লক্ষনভোগসহ নানা প্রজাতির আম গাছ। বিভিন্ন শহর থেকে এসব অঅম গাছের কলম সংগ্রহ করে আম বাগান করেছি। এ ছাড়া অষ্ট্রিলিয়ার গরুর ফার্ম করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বছর দুটি গরু পালন শুরু করেছি। মনি মোহনের স্ত্রী শিমুল রায় বলেন, বড়ই চাষ করে চাষ জাকজমকপূর্নভাবে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ঘর দজা করেছি, তাতে সৌর বিদ্যুৎ লাগিয়েছি। মোগো ভাগ্যের বদল হয়েছে। মনি মোহন আরো বলেন, সরকারের সহায়তা ছাড়াই “একটি বাড়ি একটি খামার”র আমি মডেল । নিজ উদ্যোগে যা করেছি এটা হতে পারে সারা দেশের জন্য অনুসরনিয়। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কোন পরামর্শ বা সহায়তা পাইনি। তারা পরামর্শ দিলে বাগানকে রোগ বালাই থেকে রক্ষা করে ক্ষতিয়ে কমিয়ে আনতে পারতাম।

    জহরকান্দি গ্রামের পরিমল হালদার, জয়দেব হালদার, যোগেন হালদারসহ কয়েকজন বড়ই চাষী জানান, মোরা মনি মোহন দাকে দেখেই বড়ই চাষে ঝুকছি। মোরা খাইয়া পইররা ভাল আছি। আগে খালি কয়ডা ভাতের লাইগ্যা কাম-কাইজ করতাম, কোন সপন দেখতাম না । । এ্যাহন মোরা পোলাপানরে পড়া লেহা করাইবার সপন দেহি। মোগো আর ভাতের চিন্তা করতে হয় না। রামশীল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অসিম কুমার বিশ্বাস বলেন, একজন মানুষ যে শুন্য থেকে নিজ প্রচেষ্টায় এতদুর আসতে পারে উজ্জল দৃষ্ঠান্ত মনি মোহন রায়। সম্পূর্ন নিজের মেধা ও শ্রম ও পরিকল্পনায় কয়েক বছরের ব্যবধানে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছে মনি মেহান। বর্তমানে তার ২শত শতাংশ জমি বাগান। সব মিলিয়ে সে ৫০ থেকে ৬০ টাকার সম্পদের মালিক। এ গ্রামের মানুষ খুবই অভাবি ও হতদরিদ্র ছিল। মনি মোহনকে অনুসরন করেই জহরকান্দি গ্রামের পরিমল হালদার, জয়দেব হালদার, যোগেন হালদার, বিশ্ব নাথ বিশ্বাস, মিলন জয়ধরসহ ৩৫টি টি পরিবার বড়ই চাষে নেমেছে এবং স্ববলম্ভী হয়েছে। এ গ্রামের মানুষে শিক্ষার স্বপ্ন ছিল না। আজকে তারা শিক্ষার অলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। গ্রামে প্রতিষ্ঠিা করা হয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জহরকান্দি গ্রামটির এই অংশটিকে আজকে বড়ই পাড়া হিসেবেই মানুষ চিনতে শুরু করেছে। কোটালী পাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ব্রজেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। পরামর্শ দেয়া হয় না কথাটি সঠিক নয়। খবর নিয়ে চাষীদের সব ধরনের সহায়তা ও পরাশর্শ দেয়া হবে।

    গ্রামবাসির উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা
    খেয়ে পড়ে ভাল থাকলেই মানুষের স্বপ্ন-সাধ জাগে। ব্যতিক্রম হয়নি জহরকান্দি উত্তর-পশ্চিমপাড় গ্রামের গ্রামের মানুষের ক্ষেত্রে। গ্রামের নারায়ন মÐল, সবিতা রানী, পুতুর রায়সহ অনেকেই জানান, গ্রামের মানুষের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ছেলে মেয়েদের নিয়ে শিক্ষার অলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেনে তারা। তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে গ্রামের সবাই মিলে জহরকান্দি উত্তর-পশ্চিমপাড় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্বান্ত নেন। গ্রামের ১০ জন দাতা মিলে বিদ্যালয়ের নামে তিন বিঘা জমি দান করেন। সকলের আর্থিক সহায়তায় তৈরী করা হয় একটি টিনের ঘর। সেখানে চলে শিশুদের পাঠ দান। শিক্ষক হিসেবে স্বেচ্ছশ্রম দিয়ে বিনা পয়সার শিক্ষকতা করেন গ্রামের শিক্ষিত যুবকরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্র জয়ধর বলেন, গ্রামের শিশুদের শিক্ষার জন্য আমরা ৪ যুবক বিনা পয়সায় শ্রম দিয়ে শিক্ষকতা করছি। বিদ্যালয়ে ৮০ জন ছেলে মেয়ে ভর্তি হয়েছে। বাঁশ, কাঠ ও টিন তৈরী করা ঘরে পাঠদান করা হয়। বর্ষা মৌসুমে ভুবই সমস্যা হবে। বিদ্যালয়টি জাতীয়করনসহ একটি ভবন নির্মানের জন্য সরকারের প্রতি তিনি দাবি জানান।

    Post Views: ৫০

    Share this:

    • Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
    • Click to share on X (Opens in new window) X

    সংশ্লিষ্ট খবর

    • গৌরনদীতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে দেড়শ বছরের দুর্গা মন্দির ভেঙে গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ
    • গৌরনদীতে আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
    • গৌরনদীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
    • গৌরনদীতে চিকৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা \ বিক্ষুব্ধ স্বজনদের ক্লিনিকে হামলা ভাঙচুর
    • ওয়াজ মাহফিলে জামায়াতকে ভোট দিবেন না বলায় মুসুল্লীদের প্যান্ডেল ত্যাগ
    • গৌরনদীতে দুলাল রায় দুলু’র শোক ও স্বরণ সভা অনুষ্ঠিত
    • গৌরনদীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ওপর হামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ‎
    Top