প্রধান সংবাদ
গৌরনদীতে প্রধান শিক্ষকসহ ২০জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা, গ্রেপ্তার-৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের শাহজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান আশরাফ মাহমুদ(৪৯), বিএনপি কর্মি আব্দুর রাজ্জাক প্যাদা(৩৫), ও কামরুল ইসলাম(২২)কে গত শনিবার আটক করে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ। আটককৃত তিনজনসহ ২০ বিএনপি নেতাকর্মিকে আসামি করে গতকাল রোববার উপ-পরিদর্শক মো. তাজেল ইসলাম বাদি হয়ে গৌরনদী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০১৩ একটি মামলা দায়ের করেন। আটককৃত প্রধান শিক্ষকসহ তিন জনকে গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন সান্টু অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই শাহজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান আশরাফ মাহমুদ গত শনিবার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় পাঠদান করতে বিদ্যালয়ে যান। ওই দিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে একদল পুলিশ স্কুলে পৌছে কথা শোনার জন্য কর্মস্থল থেকে ডেকে গৌরনদী থানায় নিয়ে আসেন। আমার স্বজনরা পুলিশের সঙ্গে থানায় যোগাযোগ করলে থানা থেকে জানানো হয় সে (আশরাফ) বিএনপি কর্মি এবং তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বিএনপির কোন পর্যায়ের তালিকায় আশরাফের নাম নেই এবং তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে পুলিশ বিভিন্ন তালবাহানা করেন। পরবর্তিতে গতকাল রোববার নুতন একটি মামলা রুজু করে কোর্টে চালান দেয়া হয়। আমার ভাই একজন শিক্ষক সে কোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেই। সরকারি কর্মচারীকে অভিযোগপত্র দাখিলের আগে কোন ফৌজদারি মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে না। অভিযোগপত্রে নাম থাকলেও গ্রেপ্তার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু পুলিশ আইনের তোয়াক্কা না করেই হয়রানী করতে আমার ছোট ভাইকে আশরাফকে আটক করে মিথ্যা মামলা রুজু করে তাতে গ্রেপ্তার দেখান। অভিযোগ সম্পর্কে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, পরিবার যেই দাবি করুক না কেন আশরাফ মাহমুদ একজন বিএনপি কর্মি। সে সন্ত্রাস নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সভা করছিল । এ সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উপজেলার কটকস্থল গ্রামের গোলাপী বেগম (২৮) অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী রাজ্জাক প্যাদা একজন মাহেন্দ্র চালক ও বিএনপি কর্মি। শনিবার সকাল আওয়ামীলীগ নেতা মাদানী সিকদার (৩৫) দুই সহকর্মিকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসেন। তারা রাজ্জাক প্যাদাকে ডেকে আওয়ামীলীগের বেজগাতি নির্বাচনী কার্যালয়ে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে পুলিশে সোপর্দ করে। গতকাল রোববার সন্ত্রাস বিরোধী একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে কোটে পাঠান। একই মামলায় কটকস্থল গ্রামের বিএনপি কর্মি কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখান পুলিশ।
মামলার বাদি গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তাজেল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেন, শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ কটকস্থল গ্রামের মরহুম সিকদার হাবিবুর রহমানের বাঁশ বাগানের মধ্যে ৭০ নং শাহাজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ মাহমুদ (৪৯), কটকস্থল গ্রামের রাজ্জাক প্যাদা (৩৫) ও কামরুল সরদার (২২)সহ ১২/১৫ জন নাশকতার জন্য গোপন বৈঠক করছিল। এ সময় স্থানীয় জনতা টের পেয়ে একটি রামদা. মোবাইল ফোনসেট সহ উক্ত তিন জনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করেন। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সুনিদৃষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মামলায় গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. আবুল হোসেন মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।