গৌরনদী
পোষ্টার লাগানোর অভিযেগে \ আগৈলঝাড়ায় বিএনপির ৫ নেতাকর্মির ওপর হামলা, মটরসাইকেল আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা ও গৈলা ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পোষ্টার লাগানোর অভিযোগে গত মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলা ও গৈলা ইউনিয়নের ৫ বিএনপির নেতার উপর হামলা চালিয়েছে আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা কর্মিরা। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদিকে হামলাকারীরা এক বিএনপি নেতার মটরসাইকেল আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
স্থানীয় লোকজন ও বিএনপি নেতাকর্মিরা জানান, গত সোমবার রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর ও গৈলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কে বা কারা কারারুদ্ধ খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে পোষ্টার লাগানো হয়। পোষ্টার লাগানোর অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৫০/৬০ জন নেতাকর্মি মহড়া দিয়ে লাঠিসোটা নিয়ে আগৈলঝাড়া বাজার ও গৈলায় হামলা চালিয়ে লাগানো পোষ্টা ছিড়ে ফেলে এবং পিটিয়ে ৫ জনকে আহত করেছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও আগৈলঝাড়া বাজারের ব্যবসায়ী কার্তিক চন্দ্র বেপারী (৪৮)অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা আমি আগৈলঝাড়া বাজারে আমার গার্ন্টেসের দোকানে বসা ছিলাম। রাত সাড়ে ৭টার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. ফয়জুলল সেরনিয়াবাত(৩০)র নেতৃত্বে ৩৫/৪০ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মি দোকানে আকস্মীকভাবে আমার উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে দোকান বন্ধ করতে বলেন। কাঠীরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও গৈলা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক দীনেশ হালদার(৫২) অভিযোগ করে বলেন, গতঙ্গলবার রাত সোয়া ৭টার দিকে ঘরের কিছু কেনাকাটা করতে আমি আগৈলঝাড়া বাজারে যাই। এসময় যুবলীগের সদস্য ফয়জুল সেরনিয়াবাদের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন নেতাকর্মি আমার পথরোধ করে ‘সালা তুই পোষ্টার লাগিয়েছিস বলে’ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এক পর্যায়ে আমাকে পেটায়। গৈলা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা কমিটির সদস্য অতুল সরকার(৭২) অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাত পোনে ৮টার দিকে আমি কালিখোলা কমল শিকারীর ভূষামালের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে ৪০/৫০ জন যুবলীগ ছাত্রলীগ কর্মিরা হামলা চালিয়ে আমাকে বেদমভাবে মারধর করে বাজারে আসতে নিষেধ করে দেয়। আগৈলঝাড়া উপজেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক মো. মিলন মোল্লা(৩৫) অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের পরে কালিখোলা বাজারে গেলে হঠাৎ যুবলীগ ছাত্রলীগের এক বিশাল বহর আমার ওপর হামলা চালায়। এসময় আমাকে বলে ‘সালা চোরের পোষ্টার লাগাইছ আবার বাজারে ঘোরো’। হামলাকারীরা আমাকে মেরে আহত করে বীরদর্পে চলে যান। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরছি। উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. লুৎফর রহমান(৩২) অভিযোগ করে বলেন, আমি মটরসাইকেলযোগে সুজনকাঠী বাজার থেকে নিজ বাড়ি ফেরার পথে পোনে ৬টার দিকে গৈলা রশিদ ফকিরের বাড়ির সামনে পৌছলে অগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিন্টু সেরনিয়াবাত ও আগৈলঝাড়া শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি রাজীব ঘটকের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন একটি শসস্ত্র দল আমার উপর হামলা চালায়। আমি মটরসাইকেলে থাকা অবস্থায় ঝুকি নিয়ে মটরসাইকেল চালিয়ে বাদ্যকর বাড়িতে পৌছে আশ্রয় নেই। সেখানে হামলা চালালে পিছন দিয়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেও হামলাকারীরা আমার মটরসাইকেল আটকে রাখেন। অভিযোগের ব্যপারে যুবলীগ নেতা মো. ফয়জুল সেরনিয়াবাতের কাছে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামলায় কোন ঘটনা ঘটেনি, শুধু তাদের পোষ্টার লাগাতে নিষেধ করা এবং নিরিবিলি থাকতে বলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিন্টু সেরনিয়াবাতের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে বলেন, হামলার কোন ঘটনাই ঘটেনি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মির জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচর চালানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, থানায় কেউই অভিযোগ করেনি অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।