গৌরনদী
গৌরনদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী অপহরনের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার-১-আটক-৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ এসএসসি পরীক্ষার শেষ দিনে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বরিশালের গৌরনদী গালর্স স্কুল এ্যাÐ কলেজের ছাত্রী তাহসিন ইসলাম নাফরিন(১৬)কে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মায়ের কাছ থেকে অপহরন করে মটরসাইকেলযোগে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ১৪জনকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেছে অপহৃতার মা লিপিয়া আকতার। ওই দিন রাতে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চাইলে ঘটনায় জড়িত এজাহারনামীয় এক আসামিস প্রিন্স দেওয়ানকে গ্রেপ্তারসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের তিন স্বজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পারিবারিক একাধিক সদস্য জানান, গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন চাঁদশী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মো. নুরু সিকদারের কন্যা গৌরনদী গালর্স স্কুল এ্যাÐ কলেজের ছাত্রী তাহসিন ইসলাম নাফরিন(১৬)কে একই উপজেলার কসবা গ্রামের মন্টু ফকিরের পুত্র বখাটে আশিক ফকির(২১) দীর্গদিন যাবত স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করে আসছিল। স্কুল ছাত্রী অফরিন বিষয়টি তার মাকেসহ বাড়ির অভিভাবককে জানালে তারা বখাটে আশিক ফকিরের বাবা-মাকে জানান। পারিবারিকভাবে একাধিকবার আশিকের বিচার করা হয়। এতে আশিক ক্ষিপ্ত হয়। স্কুল ছাত্রীর এক সহপাঠি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ১৯ জানুয়ারি তারা দুই বান্ধবী কোচিং শেষে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চাঁদশীহাটের পশ্চিম পাশে চাটাবাড়ি ব্রিজের কাছে পৌছলে বখাটে আশিক ফকির ও তার সহযোগীরা পথ আটকে নানান অশ্লীল কথা বার্তা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাহসিনকে অপহরনের হুমকি দেয়।
অপহৃতা ছাত্রীর মা লিপিয়া আক্তার জানান, এসএসসির পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে সে নিজেই মেয়ে তাহসিনকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় আসা যাওয়া করতেন। গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান পরীক্ষা শেষে উপজেলার পালরদী মডেল স্কুল এ্যন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে কন্যা তাহসিন ইসলাম নাফরিনকে নিয়ে রিকশা যোগে নিজ বাড়ি উপজেলার দক্ষিন চাঁদশী গ্রামের ফিরছিলেন। পথিমধ্যে দুপুর ২টার দিকে চাঁদশী নামক স্থানে হানিফ হাওলাদারের দোকানের সামনে পৌছলে আশিক ফকিরে নেতৃত্বে পেছন দিক থেকে ৪টি মোটরসাইকেল যোগে ১০/ ১২জন বখাটে যুবককে নিয়ে তাদের বহনকারী রিকসাকে ঘিরে ফেলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরন করে মোটরসাইকেলযোগে নিয়ে যায়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রিকসা চালক মো. হালিম সরদার(২৬) বলেন, সন্ত্রাসীরা অস্ত্র দিয়ে আতংক সৃষ্টি করে জোরপূর্বক টেনে হেচরে সিনেমার মত মটরসাইকেলে উঠাইয়া নিয়া গেছে। এসময় মা ও মাইয়া ডাক চিৎকার করলেও সন্ত্রাসীগো ভয়ে কেউ আগাইয়া আহে নাই। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে প্রধান অসামি আশিক ফকিরের মুঠোফোনে কর করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারকৃত প্রিন্স দেওয়ান বলেন, আমি অপহরনের বিষয়টি জানতাম না, বন্ধুরা আমাকে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে গিয়েছিল।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, অপহরনের ঘটনায় অপহৃতার মা লিপিয়া আক্তার বাদি হয়ে প্রধান আসামি উপজেলার কসবা গ্রামের মন্টু ফকিরের পুত্র বখাটে আশিক ফকির(২১)সহ ১১জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারনামীয় আসামি কসবা গ্রামের চাঁদ দেওয়ানের পুত্র প্রিন্স দেওয়ান(২২)কে অপহরনে ব্যবহৃত মটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া এজাহারভূক্ত আসামি সাকিবের ভাই ৭ম শ্রেনির ছাত্র হিমেল, বাবা গনি খান(৫৫) ও মামা জুয়েল রারি(৪৭)কে জিজ্ঞাসাবাদে আটক করা হয়েছে। অপহৃতাকে উদ্ধার ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যহত রয়েছে।