গৌরনদী
সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশের অস্ত্র লুটের চেষ্টা মামলা ॥ উজিরপুরের পুলিশ ক্যাম্পে পুত্রকে আটকে নির্যাতন প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক বাবােেক লাঞ্চিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর পুলিশ ক্যাম্পে ন্থানীয় এক সাংবাদিক পুত্রকে গত শনিবার দুপুরে দড়ি দিয়ে বেধে নির্যাতন করে ক্যাম্পের দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনার প্রতবিাদ করায় দৈনিক আজকের পরিবর্তনের উজিরপুর প্রতিনিধি ও উজিরপুর রিপোটার্স ইউনিটির সাধারন সম্পাদক সাকিল মাহমুদকে ঘার ধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করেছে ওই দুই কনষ্টবল। এখানেই শেষ নয়, ক্ষিপ্ত পুলিশ সদস্য শেখ মাহাবুব বাদি হয়ে গতকাল রবিবার উজিরপুর মডেল থানায় একটি মিথা মামলা দায়ের করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, উজিরপুর রিপোটার্স ইউনিটির সাধারন সম্পাদক ও বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের পরিবর্তন পত্রিকার উজিরপুর প্রতিনিধি মো. সাকিল মাহমুদের কনিষ্ট পুত্র জয়শ্রী মু-পাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনির ছাত্র রাতুল মাহমুদ(১১) ও একই উপজেলার জয়শ্রী মু-পাশা গ্রামের মো. মিজান বিশ্বাসের পুত্র জয়শ্রী মু-পাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্র হৃদয় বিশ্বাস(১৪) শনিবার সকালে তেতুল খেতে স্কুলের পাশ্ববর্তি গৌরাঙ্গ চক্রবর্তীর বাড়িতে যান। এ সময় রাতুল মাহমুদ ও হৃদয় বিশ্বাসের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। দুই শিশুর মার থামাতে গিয়ে স্থানীয় মঞ্জু বেগম রক্তাক্ত আহত হন। খবর পেয়ে সাংবাদিক সাকিল মাহমুদের জেষ্ঠ্য পুত্র বরিশাল ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বয়ের ছাত্র জয় মাহমুদ ঘটনাস্থলে যান। একই সঙ্গে শিকারপুর বাজার পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্য মো: ফয়সাল, মো সুমন হাওলাদার, মো: কাওছার হোসেন, মো: রাসেল হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে জয় মাহমুদকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন।
সাংবাদিক সাকিল মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, আমার জেষ্ঠ্য পুত্র জয় মাহমুদকে আটকের খবর পেয়ে আমি পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে পুত্রকে আটকের বিষয়ে জানতে চাই। এতে পুলিশ কনষ্টবল শেখ মো. মাহবুব হোসেন (কং/১৪১৭) ও মো. ফয়সাল (কং/১৩১৪) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি গালিগালাজের প্রতিবাদ করলে আমার সামনে পুত্র জয় মাহমুদকে রসি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে মারধর করতে বারন করলে শেখ মাহবুব ও ফয়সাল আমাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করে রসি দিয়ে বাধতে চেষ্টা করে। সাকিল মাহমুদ আরো বলেন, আমার পুত্রকে বেদম মারধরে, আমাকে লাঞ্চিত করেই পুলিশ কনষ্টবল ক্ষেন্ত হননি উল্টো আমাকে আসামি করে কনষ্টবল শেখ মাহবুব হোসেন বাদি হয়ে আমার বিরুদ্ধে উজিরপুর মডেল থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
পুলিশ ক্যাম্পে সাংবাদিক পুত্রকে নির্যাতন ও সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিকার বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির ক্রীড়া সম্পাদক ও ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, একজন বাবার সামনে পুত্রকে নির্দয়ভাবে পেটালে কোন বাবাই প্রতিবাদ না করে থাকতে পারেনা। সেজন্য পুলিশ বাবাকে রসি দিয়ে বাঁধার চেষ্টা করে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
উজিরপুর থানায় দায়ের করা মামলায় বাদি পুলিশ কনষ্টবল মাহবুব উল্লেখ করেন, আসামি সাকিল মাহমুদ অনধিকার চর্চা করে ক্যাম্পের ভিতরে ঢুকে ক্যাম্পের পুলিশ কর্মকর্তা ও কনষ্টবলদের গালাগাল করে অস্ত্র লুটে নিতে অস্ত্রাগারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আমি বাধা দেই। এসময় সে আমাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে আসামি সাকিল মাহমুদ আমার হাতে থাকা চায়না রাইফেল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিকারপুর পুলিশ ক্যাম্পের কনষ্টবল শেখ মাহবুব হোসেন সাংবাদিক পুত্রকে নির্যাতন ও সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি বরং সাংবাদিক আমার সঙ্গে খারাব আচরন করেছে। এমন কি আমাকে মারধর করে যে কারনে আমি মামলা দাযের করেছি। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে কনষ্টবল মো. ফয়সালকে মুঠোফোনে কল তিনি তিনিতা গ্রহন করেননি। এ প্রসঙ্গে ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক(এসআই) মো. মোজাম্মেল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিক পুত্রকে নির্যাতন ও সাংবাদিককে লাঞ্চিত করার কোন ঘটনা ঘটেনি। বরং সাংবাদিক পুত্র জয় মাহমুদ মঞ্জু বেগম নামে এক নারীকে রক্তাক্ত জখম করেছে। পরবর্তিতে ক্যাম্পে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পুলিশ কনষ্টবল মাহবুবকে মারধর করেছে। এ প্রসঙ্গে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, গোলাম সরোয়ার বলেন, পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় কনষ্টবল মাহবুব বাদি হয়ে সাকিল মাহমুদকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সাংবাদিকে লাঞ্চিত ও ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন উজিরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির কর্মকতৃা ও সাংবাদিকরা।