গৌরনদী
তারেক জিয়ার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হামলা ॥ নাশকতার মামলায় গৌরনদীর বিএনপির ৬১ নেতা কর্মি কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বিএনপির সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্ম দিন উপলক্ষে বরিশালের গৌরনদী পৌর সদরে গত সোমবার কেককাটা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা কর্মিরা। হামলায় কমপক্ষে ২০ নেতা কর্মি আহত হয়। হামলার পর পুলিশ উল্টো ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬১ জন নেতা কর্মি আটক করেছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক(এসআই) মো. সগির হোসেন বাদি হয়ে নাশকতার একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আসামিদের গতকাল দুপুর সোয়া তিনটায় একটি লোকাল বাসযোগে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, গৌরনদী পৌর সদরের পালরদী এলাকায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা কর্মি নাশকতার সৃষ্টি ও বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছিল। সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ হানা দিয়ে ৬১ জন নেতা কর্মিকে আটক করেছে। ওই ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মো. সগির হোসেন বাদি হয়ে ৬১ জনের নাম উল্লেখসহ আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
আটককৃত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মির অভিভাবকরা জানান, তাদের ছেলে ও স্বজনদের আটক করে গৌরনদী থানায় নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে তারা থানায় গেলে রাত ৮টার দিকে থানার মধ্যে তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতা কর্মিরা। আটক উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য জি,এম, সুনানের সহদর জি,এম খোরশেদ অভিযোগ করে বলেন, ভাইর খবর পেয়ে সোমবার রাত ৮টার দিকে থানায় গেলে থানার মধ্যে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা কর্মিরা আমাকে মারধর করে থানা থেকে বের করে দেয়। একই অভিযোগ করেন, আটক ছাত্রদল নেতা সুজন সরদারের স্বজন, তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মিরা তাকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় । নাম প্রকাশ না করার শর্তে আটক এক যুবদল নেতার মা বলেন, ছেলের খবর পেয়ে আমি থানায় গেলে আমাকে পুলিশের সামনে লাঞ্চিত করেছে সরকারি দলের পোলাপানে। এক পর্যায়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে থানা থেকে বের করে দেয়।
দায়েরকৃত মামলার আসামি গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী সরোয়ার হোসেন, বার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলামসহ বিএনপির ১০ কর্মি, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মাসুম হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদারসহ যুবদলের ১৮ নেতা কর্মি ও গৌরনদী পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক মো. মাহফুজ মোল্লা, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাফর খান, সহ সম্পাদক জি,এম সুনান, মাসুম বেপারী, সবুজ হাওলাদারসহ ছাত্রদলের ৩৩ নেতাকর্মি।
অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, থানার মধ্যে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। তারেক জিয়ার জন্ম দিনের অনুষ্ঠান নয়, নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বিএনপির নেতাকর্মিরা। বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই গ্রেপ্তার করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, ক্ষমতাসীনরা আমাদের কোন কর্মসূচী পালন করতে দিচ্ছে না। এমন কি বসত ঘরের মধ্যে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে উল্টো আমাদের নেতাকর্মিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। এছাড়া হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহান, কেন্দ্রীয় সদস্য ও জাতীয়তাবাদি আইনজীবি ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও বরিশাল উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়া।