প্রধান সংবাদ
বরিশালে চলন্ত বাসে দুই যুবতী ধর্ষিত ॥ ধর্ষক ৫ শ্রমিক গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ চলন্ত বাসে ছয়জন শ্রমিক কর্তৃক দুই খালাতো বোনকে ধর্ষণের মামলায় ৫ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশ।
আটকৃত ধর্ষক শ্রমিকরা হলো, নগরীর নথুল¬াবাদ বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য রনি, তারেক, দেবাশিষ, সুজন ও নাসির উদ্দিন। মিজান নামের আরও এক ধর্ষককে গ্রেফতারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। থানার ওসি রেজাউল ইসলাম এজাহারের বরাত দিয়ে বলেন, গত ২৩ জানুয়ারি গভীর রাতে বানারীপাড়ার চাখারের বাসিন্দা দুই যুবতী (খালাত বোন) কুয়াকাটা থেকে বরিশালে আসেন। তারা বরিশাল-বানারীপাড়া রুটের সেবা পরিবহন নামের একটি বাসে চাখারের নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য ওঠেন। সেই সুযোগে নথুল¬াবাদ মাইক্রোস্ট্যান্ড থেকে রামপট্টি পর্যন্ত দুই যুবতীকে বাসের মধ্যে আটকে পালাক্রমে ধর্ষন করে বাসে থাকা চালক, হেলপার এবং সুপারভাইজারসহ ৬ শ্রমিক। বিষয়টি নিয়ে যুবতীরা মামলা করার প্রস্তুতি নিলেও শ্রমিক নেতাদের চাঁপের মুখে তা বিলম্ব হয়। জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ধর্ষণের ঘটনাটি মীমাংসার কথা বলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে ধর্ষনের শিকার এক যুবতীর স্বামী মেহেদী হাসান বাদি হয়ে মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানায় ছয়জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
কাউনিয়া থানার দায়িত্বে থাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আজাদ রহমান বলেন, মামলা দায়েরের পরে রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত থানা পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় নথুল¬াবাদসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এরমধ্যে মিজান নামের আরও এক শ্রমিক পালাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
মামলার বাদি মেহেদী হাসান জানান, ধর্ষকরা তার স্ত্রী ও শালিকাকে গণধর্ষন করার পর তা মোবাইলে ভিডিও করে রাখার হুমকি দিয়ে তার (মেহেদী হাসান) কাছে ৬০হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। একপর্যায়ে ধর্ষকেরা তার (মেহেদী হাসান) কাছ থেকে ১৫হাজার হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে এ ঘটনা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামালের কাছে বিচার চাইলে মোস্তফা কামাল বিচারের নামে ধর্ষকদের পক্ষালম্বন করে নানা তালবাহানা শুরু করে। গত পাচঁদিন পূর্বে মোস্তফা কামাল ধর্ষণকারীদের ২২হাজার টাকা জরিমানা করে। এতে তিনি ন্যায় বিচার না পেয়ে অন্য এক শ্রমিক নেতার সাহায্য কামনা করেন। পরবর্তীতে তার সহায়তায় উপ-পুলিশ কমিশনার আবু সালেহ মোঃ রায়হানের নির্দেশে এয়াপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
সূত্রমতে, বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। এরপূর্বে ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল ইসলাম আদালতের খাস কামড়ায় বসে ধর্ষিতা দু’বোনের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত ৫জনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে।