গৌরনদী
প্রকাশ্যে নারীর শ্লীলতাহানী ॥ গৌরনদীর সেই কুখ্যাত সন্ত্রাসী কুট্টি গ্রেপ্তার, জনমনে স্বস্তি ও মিষ্টি বিরতন
নিজস্ব প্রতিবেদক,গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ প্রবাসীর স্ত্রী ও শালীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ায় রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্যে দিবালোকে টরকী বন্দরে প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতা পেটা করে সেই ছবি ইণ্টারনেট ও ফেইসবুকে ছেড়ে দেওয়ার মামলার প্রধান আসামি, মাদারীপুরে একটি হত্য, গৌরনদীতে চাঁদাবাজি, অসামাজিক কার্যকলাব, নারীর শ্লীলতাহানী, সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বহু মামলার অভিযুক্ত, তিন বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি গৌরনদীর কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাহাবুবুর রহমান কুট্টিকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গৌরনদী থানা পুলিশ উপজেলা বাউরগাতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল বুধবার তাকে বরিশাল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসী কুট্টির গ্রেপ্তারের সংবাদে টরকী বন্দরের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও জনমনে স্বস্তি নেমে আসে। অনেকেই মিষ্টি বিতরন করেন।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গৌরনদী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এস,আই) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাউরগাতি গ্রামে জনৈক সাইফুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই বাড়িতে অবস্থান নেওয়া গৌরনদীর কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাহাবুবুর রহমান কুট্টি পুলিশের টের পেয়ে দৌড়ে পলানোর চেষ্টা কর। এসময় এস.আই নজরুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স জীবনের ঝুকি নিয়ে ধাওয়া করে কুট্টিকে পাকড়াও করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
গৌরনদী থানার ওসি আরো বলেন, টরকীর কুথ্যাত সন্ত্রাসী মাহাবুবুর রহমান কুট্টি মাদারীপুর জেলা একটি হত্যা মামলার আসামি, এছাড়া তার বিরুদ্ধে গৌরনদী থানায় চাঁদাবাজি, অসামাজিক কার্যকলাব, নারীর শ্লীলতাহানী, সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বহু মামল রয়েছে এবং একটি মামলার তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত ও পুলিশের মোষ্ট ওয়ানটেড আসামি। তাকে ধরার জন্য পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে প্রচেস্টা চালিয়ে আসছিল। সে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত গ্রেপ্তার এড়িয়ে পলাতক ছিল। সন্ত্রাসী কুট্টি টরকীর বিভিন্ন এলাকায় নারীর শ্লীলতাহানী করে আসছিল। আত্ম সম্মানের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি।
কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাহাবুবুর রহমান কুট্টি একটি মোবাইল রিচার্জের দোকান থেকে গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর এলাকার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আ. হালিম সরদারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩০)র ও তার ছোট বোন বোন পপি আকাতার (১৮)র মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে পপি আক্তারকে কু প্রস্তাব দেন। পপি তা প্রত্যাখান করলে মাহাবুব প্রায়ই ফোন দিয়ে তাকে উত্যাক্ত করে আসছিল। পপি আক্তার বিষয়টি তার বড় বোন মরিয়ম বেগমকে জানালে মরিয়ম যুবলীগ নেতা মাহাবুবকে উত্যাক্তে করতে নিষেধ করে সাসিয়ে দেয়। সন্ত্রাসী কুট্টি এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছোট বোন পপির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দিতে বড় বোন প্রবাসীর স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে সে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বিভিন্ন গালিগালাজ করে বোনকে অপহরনসহ শ্লীলতাহানি করে তা ইণ্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হুমকি প্রদান করে।
গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে প্রবাসীর স্ত্রী টরকী বন্দরে যাওয়ার পথে টরকী বন্দর হাইস্কুলের সামনে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা কুট্টি তার ২/৩জন সহযোগীকে নিয়ে পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানী ঘটায়। এক পর্যায়ে মরিয়ম প্রতিবাদ করলে যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে তাকে (মরিয়ম) জুতাপেটাসহ মারধর করে গুরুতরভাবে জখম করে তার ব্যবহৃত স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন। কয়েকদিন পর হামলাকারীরা প্রবাসীর স্ত্রীর উপর হামলার ভিডিও নিজেরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইণ্টারনেট ও ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়। পরে প্রবাসীর স্ত্রী গৌরনদী থানায় কুট্টির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
সন্ত্রাসী কুট্টি গ্রেপ্তারের সংবাদে টরকী, সুন্দরদী, টরকীরচর, বাউরগাতি, আনন্দপুরসহ আশপাশএলাকায় স্বস্তি নেমে আসে। তার দ্বারা আক্রান্ত একাধিক নারী পুরুষ জানান, সন্ত্রাসী কুট্টি ভয়ে তারা এতদিন নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন। গ্রেপ্তারে স্বাচ্ছন্দরোধ করনে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন ব্যবসায়ী জানান, কুট্টি গ্রেপ্তার টরকীর বন্দরের কতিপয় ও সাধারন মানুষ মিষ্টি বিতরন করেন। সন্ত্রাসীর কুট্টি অত্যাচারে অতীষ্টরা অনেকেই ফোন দিয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাহাবুবুর রহমান কুট্টিকে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানান বলে ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন জানান।