গৌরনদী
গৌরনদীতে দাদা বাড়ি বেড়াতে এসে খুন হল শিশু সাফওয়ান, আটক-২
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা থেকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের দাদা বাড়িতে বেড়াতে এসে নিখোঁজের একদিন পর বৃহস্পতিবার ভোরে জমির মধ্য থেকে শিশু সাফওয়ানের (৫) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে আটক করেছে। উত্তেজিত এলাকাবাসী আটককৃতদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। ঘটনাটি । নিহত সাফওয়ান ওই গ্রামের ইমরান শিকদারের ছেলে। খবরপেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখি জানান, বুধবার দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় অন্যান্য শিশুদের সাথে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে রাতেই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন সাফওয়ানের দাদা বারেক শিকদার। বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে স্থানীয় মান্না বেপারীর বিল্ডিংয়ের পিছনের একটি জমির মধ্যে শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, নিহত শিশুর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে একই বাড়ির লোকমান চৌধুরীর বসত ঘরে তল্লাশী চালিয়ে হত্যার বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লোকমান চৌধুরীর ছেলে রুমান চৌধুরী ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে। নিহত শিশুর একাধিক স্বজন জানান, জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ রোমান চৌধুরী ও মুজাম্মেল হক চৌধুরী ও তাদের সমর্থকরা শিশুটিকে অপহরন করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নিহত শিশুর দাদা বারেক সিকদার বলেন, প্রতিবেশি লোকমান চৌধুরীর সাথে জমির সীমানা নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার দুপুরে লোকমানের ছেলে রুমানকে আমার নাতির সাথে কথা বলতে দেখেছে স্থানীয়রা। আটককৃত ইউপি সদস্য মোজাম্মেল বলেন, বিনাকারণে তাকে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি মারধর করে গুরুত্বর আহত করেছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ শিশু সাফওয়ান হত্যাকান্ডের সাথে ইউপি সদস্যর সরাসরি যোগ সূত্রের আলামত রয়েছে। এদিকে শিশুটির মরদেহ পাওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আটককৃত ইউপি সদস্যকে সেনা ও র্যাবের সহায়তায় থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছেন।