গৌরনদী
গৌরনদীতে শিক্ষার্থীকে শিকল পরিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের লক্ষনকাঠি গ্রামের হাজী আব্দুল হাই-কুলসুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে প্রায় বিশ ঘন্টা পায়ের সাথে কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সোমবার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ দুপুরে এজাহারভূক্ত প্রধান আসামি মাদ্রাসার শিক্ষক জিহাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। আহত শিক্ষার্থী উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট এলাকার মৃত আউয়াল হাওলাদারের ছেলে তরিকুল ইসলাম (১১)।
মাদ্রাসার নাজেরা শাখার ছাত্র তরিকুল হাওলাদার জানায়, শনিবার বিকেল তিনটার দিকে ক্লাসে পড়ানোর সময় অন্য এক সহপাঠির সাথে কথা বলার অভিযোগে শিক্ষক (ছোট হুজুর) জিহাদুল ইসলাম আমাকে আধা ঘন্টার মত দাড় করিয়ে রাখেন । এসময় আমার প্রসাবের চাপ শুরু হলে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু হুজুর আমাকে টয়লেটে যেতে না দিয়ে তার কাছে যেতে বলেন। পেটানোর ভয়ে তার কাছে না যাওয়ায় দুইজন ছাত্রকে দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে পেটানো হয়। এরপর হুজুরে আমাকে কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে বলেন। আমি তার কথামত কান ধরে দাড়িয়ে না থাকায় অন্য ছাত্রদের দিয়ে কান টান দেওয়ায় এবং কানধরে ওঠবস করায়। পরে ছাত্রের হাত থেকে ছুটে আমি মাদ্রাসার বাইরে চলে যাই। এসময় আমাকে ধরে এনে শিকল দিয়ে বেঁধে পেটানো হয়। শনিবার বিকেল তিনটায় পায়ের সাথে কোমরে শিকল পরানো হয় এবং সারারাত শিকলবন্ধী করে রাখার পর নির্যাতন সইতে না পেরে রোববার সকাল এগারটার দিকে শিকল ভেঙ্গে বাড়িতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।
ভুক্তভোগি ছাত্রের বড় ভাই মাসুম হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে নির্যাতনের বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালক দাদন মিয়া ও বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইনকে অবহিত করেছি কিন্তু বড় হুজুর কোন বিচার না করেননি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। অভিযোগের ব্যাপারে শিক্ষক জিহাদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শাসন করতে কিছু সময়ের জন্য শিকলবন্ধী করে রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার বড় হুজুর ইলিয়াস হোসাইন বলেন, শাসনের জন্য যেটুক করা হয়েছে তা না করলেও হত। । গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষার্থীর বড় ভাই মাসুম হাওলাদার বাদি হয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক জিহাদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসাইনসহ তিনজনকে আসামি করে সোমবার একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভূক্ত প্রধান আসামি মাদ্রাসার শিক্ষক জিহাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।