গৌরনদী
উজিরপুর উপজেলা নির্বাচন\ ভাইর দোয়া নিয়া নাইম্মা গেছি, ধরমু ঘেডি-দিমু মাডি,কিসের ….কান্দাকাটি
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভাইর দোয়া নিয়া নাইম্মা গেছি, ধরমু ঘেডি-দিমু মাডি, কিসের চ্যাটের কান্দাকাটি। কথাগুলো বলছিলেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মোঃ ইউসুফ হোসেন। উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইউসুফ হোসেনের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ হাফিজুর রহমান ইকবালের আয়োজনে বামরাইল ইউনিয়নের উঠান বৈঠকে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মিদের হুমকি দিয়ে ইউসুফ হোসেন উদ্বাত্যপূন এ সব কথা বলেন। তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মির ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ব্যক্ত করেন।
স্থানীয় লোকজন, দলীয় নেতাকর্মি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জাসদের একজন প্রার্থী রয়েছেন। প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ সিকদার, সহসভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান ইকবাল, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির উপদেষ্টা সুখেন্দ্র বৈদ্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম। উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মিরা বিভক্ত হয়ে আওয়ামীলীগের তিন নেতা ও চেয়ারম্যানের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা একেক জন একেকজনকে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবারে বামরাইল ইউনিয়নের হাফিজুর রহমানের উঠান বৈঠকে বামরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্ধী ও প্রতিপক্ষকের সমর্থকদের হুমকি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির বক্তব্য দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একাধিক প্রার্থী জানান, চেয়ারম্যান ইউসুফের বক্তব্য অহংকারী উদ্বাত্যপূর্ন “ ভাইর দোয়া নিয়া নাইম্মা গেছি, ধরমু ঘেডি-দিমু মাডি, কিসের চ্যাটের কান্দাকাটি।” এ ছাড়াও ইউসুফ হোসেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর নাম ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউসুফ হোসেনের বক্তব্য প্রত্যহারের দাবিসহ ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান অওয়ামীলীগের দুই প্রার্থী।
উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ সিকদারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক অশোক কুমার হালদার অভিযোগ করে বলেন, বামরাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের নির্বাচনী সভায় বামরাইলের ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন অশ্লীল ও উত্তেজনাকর ও হুমকিমূলক বক্তব্য দিয়ে এলাকার আইন শৃংখলার অবনতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। উজিরপুরে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে এ বক্তব্য দিচ্ছে। বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, দক্ষিনাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবারে নির্বাচনে উজিরপুরের কোন প্রার্থীকে সমর্থন দেন নাই। ইউসুফ হোসেন হাসনাত ভাইর নাম ভাঙ্গিয়ে বিশেষ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে দিয়েছে বলে মিথ্যাচার চালাচ্ছে। এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার থেকে বিরত থাকারও আহবান জানাচ্ছি। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির উপদেষ্টা অধ্যক্ষ সুখেন্দ্র বৈদ্য বলেন, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ কাউকে সমর্থন দেননি। তিনি আমাদের তিনজনেকই ভালবাসেন। যেই প্রার্থীরা হাসানাত ভাই সমর্থন দিয়েছে বলেন তারা হাসানাত ভাইর ইমেজ ক্ষুন্ন করতে মিথ্যাচার চালাচ্ছে। বামরাইল চেয়ারম্যান যে উদ্বাত্যপূর্ন বক্তব্য দিয়েছে তা নির্বাচনী আচরন বিধি লংঘন। এ বক্তব্য দেয়ার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে তার বিচার চাই। বিএনপির দালাল ও বিনা ভোটের ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন সুন্দর, শান্তিপূর্ন সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে পায়তারা করেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মজিদ সিকদার বলেন, আমরা প্রার্থীরা প্রত্যেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছি, কেউ কেই ইউপি চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছি সেহেতু আমাদের বক্তব্য দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে উত্তেজনাপূর্ন বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে ফোন দিলে তিনি তা ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সারা মেলেনি। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ হোসেন বলেন, আমি ভিডিও দেখিনি তবে ডিজিটাল যুগে কেউ আমার বক্তব্য এডিড করে আমাকে হেয় করতে ফেইসবুকে ছাড়তে পারে। আমি ভিডিওটি দেখে বিস্তারিত বলতে পারবো। উজিরপুর সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, ইউসুফ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত কোন অভিযোগ করেনি, আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুষ্ঠ অবাধ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচনের স্বার্থে আচারন বিধি লংঘনকারী বা শান্তিপূর্ন পরিবেশ বিগ্নকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওযা হবে।