বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী ও শ্বাশুড়িকে আসামি করে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামে দাবিকতৃ যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের মা ফুলমালা হালদার বাদি হয়ে জামাতা ও জামাতার মাকে আসামি করে শনিবার আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন, নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের অমৃত হালদারের মেয়ে মিতালী হালদারের (২৩) সঙ্গে একই উপজেলার থানেশ্বরকাঠী গ্রামের মৃত নির্মল বৈদ্যর ছেলে মিন্টু বৈদ্যর (২৭) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৩ সালে উভয়ের পরিবারের সিদ্বান্ত সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে কিছুদিন না যেতেই স্বামী মিন্টু বৈদ্য স্ত্রী মিতালীকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে ২০১৪ সাল থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই ছিল। নিহতের মা ফুল মালা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পরে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের এক বছর পর থেকে বিভিন্ন সময় জামাতা মিন্টু বৈদ্য ও তার মা পুষ্প বৈদ্য যৌতুকের জন্য মিতালীর উপর চাপ সৃষ্টি করে। মেয়ের সুখের জন্য দুই লাখ টাকা দেয়া হয়। এর পরেও আরো টাকা আনার জন্য মিতালীকে প্রায়ই মারধর করে আসছিল। এ নিয়ে সামাজিকভাবে একাধিকবার সালিস মিমাংসার আয়োজন করা হয়। এরই মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে জামাতা মিন্টু বৈদ্য প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। এতে আমার মেয়ে বাধা দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। পরকীয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যা করা হবে বলে জামাতা মিন্টু মেয়েকে হুমকি দেয়। মেয়ে মিতালী বিষয়টি গত বুধবার আমাকে জানিয়ে তাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু আমি বুঝিয়ে সুঝিয়ে ধৈর্য্য ধরার জন্য মেয়েকে বলি। আমি মাকে নিয়ে গেলে আজ তাকে প্রানে মরতে হত না।
ফুলমালা হালদার অভিযোগ করে আরো বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় যৌতুক ও পরকীয়র ঘটনায় স্বামী মিন্টু বৈদ্য ও শ্বাশুরী পুস্প বৈদ্যরসহ বাড়ির লোকজনের সাথে মিতালীর ঝগড়াঝাটির ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিতালীকে তার স্বামী ও শ্বাশুরীসহ বাড়ির লোকজন বেদমভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে মিতালীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে সে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচারনা চালায় এবং আমাকে খবর পাঠায়। খবর পেয়ে আমি পুলিশ নিয়ে শুক্রবার গভীর রাতে লাশ উদ্ধার করি। পুলিশের খবর পেয়ে জামাতা ও তার মা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতেই পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। শনিবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। একই দিন নিহতের মা ফুল মালা বাদি হয়ে জামাতা মিন্টু বৈদ্য ও মেয়ের শ্বাশুড়ি বেয়াইন) পুষ্প বৈদ্যর নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।