বরিশাল
উজিরপুরে পরকীয়ার জেরে যুবক খুন
নিজস্ব প্রতিবেদক, পরকীয়ার জের ধরে বরিশালের হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি এলাকায় শুক্রবার মাঝ রাতে মধ্য হারতা গ্রামের বাসুদেব চক্রবর্তি ওরফে তুনো ঠাকুর (৪০) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুুতি নিচ্ছেন। এ ঘটনায় মিতু ভাংরা (৩২) নামে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীকে পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ স্থানীয়রা জানান, উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের মধ্য হারতা গ্রামের মৃত নারায়ন চক্রবর্তির পুত্র বাসুদেব চক্রবর্তি ওরফে তুনো ঠাকুর (৪০) হারতা বাজারের বাস কাউন্টারে টিকেট মাষ্টার হিসেবে কাজ করত। করোনায় বাস বন্ধ থাকায় সম্প্রতি সময়ে সে হারতা বাজারে কাঁচা তরকারীর ব্যবসা করেন। বাসুদেব হারতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নিখিল চক্রবর্তির ছোট ভাই। পারিবারকি সদস্যরা জানান, বাসুদেব প্রতিদিন রাত ১০টার মধ্যে বাড়ি ফিরেন কিন্তু শুক্রবার রাতে বাড়িতে ফিরেননি। রাত তিনটায় একটি মুঠোফোন থেকে বড় ভাই যুবলীগ নেতা নিখিল চক্রবর্তিকে ফোন দিয়ে বলা হয় আপনার ভাইর লাশ জাম বাড়ি জমির পাশে পরে আছে। খবর পেয়ে বিষয়টি উজিরপুর মডেল থানা পুলিশকে জানানো হয়।
এলাকাবাসি ও পুলিশ জানান, বাসুদেব চক্রবর্তি দীর্ঘ দিন যাবত হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামের শিব ভাংড়ার কন্যা স্বামী পরিত্যাক্তা মিতু ভাংড়ার (৩২) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে মিতু ভাংড়ার ভাই বিজয় ভাংড়া ও উত্তমর সাথে বিরোধে জড়িয়ে পরেন। জামবাড়ি গ্রামের গ্রাম পুলিশ গৌতম বল্লভ বলেন, শুক্রবার রাত ২টার দিকে মিতুর ভাই বিজয় ভাংড়া আমার বাড়িতে এসে তার সাথে আমাকে যেতে বলেন। কোথায় যাবো? কি হয়েছে? জানতে চাইলে বিজয় ভাংড়া বলেন গেলেই দেখতে পাবেন। আমি তার সাথে ঘটনাস্থলে এসে মূমূর্ষ অবস্থায় বাসুদেব চক্রবর্তিকে দেখতে পাই এবং বিষয়টি পুলিশ ও বাসুদেব চক্রবর্তির পরিবারকে জানাই। এরই মধ্যে বিজয় ভাংড়া সটকে পরে।
হারতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নিখিল চক্রবর্তি অভিযোগ করে বলেন, রাত ৩টায় আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মূমূর্ষ অবস্থায় ভাইকে উদ্ধার করে হারতা বাজারের চিকিৎসক ডাঃ নগেন্দ্র নাথ হালদারের চেম্বারে নিয়ে যাই কিন্তু সেখানে পৌছলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। নিখিল অভিযোগ করে আরো বলেন, মিতুর ভাই বিজয় ভাংড়া সহদর উত্তম ভাংড়া তাদের সন্ত্রাসী সহযোগীদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। ভাইকে পিটিয়ে অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে ঘটনাস্থলে বাসুদেব পায়খানা প্র¯্রাব করে দেয়। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আলাউদ্দীন বলেন, মিতু ভাংড়ার সাথে বাসুদেব চক্রবর্তির দীর্ঘ দিনের পরকীয় সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাদের ভাইদের সাথে বিরোধ চলছিল ধারনা করা হচ্ছে পররকীয়ার জেরে প্রতিপক্ষ লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, কথিত প্রেমিকার বাড়ির পাশ থেকে বাসুদেব চক্রবর্তিকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে মারা যায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিতু (৩২) নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে বিজয় ভাংড়া সহোদর উত্তম ভাংড়া পলাতক রয়েছে।