বরিশাল
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শওকত আলী করোনা আক্রান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ শওকত আলী করোনার আক্রান্ত হয়ে গত ৬ দিন ধরে উজিরপুরের সরকারি বাস ভবনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডাঃ শওকত আলী ও তার স্ত্রী করোনার শুরু থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত চিকিৎসক দম্পতি মাঠ পর্যায়ের করোনা যোদ্ধা হিসেবে রোগীদের সেবা প্রদান করে আসছিলেন। ২০২০ সালের ১০ মে দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতায় “এক সঙ্গে লড়ছেন চিকিৎসক দম্পতি” শিরোনামে একটি সংবাদ ছাপা হয়।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ শওকত আলী জানান, গত ১৮ মে অফিসে গেলে তার শরীরে জ্বর জ্বর অনুভন করেন। পরের দিন তার মধ্যে কোভিট -১৯র উপসর্গ দেখা দেয়। ২১ জুন কোভিট পরীক্ষা করালে তার কোভিট শনাক্ত হয়। বর্তমানে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি বাস ভবনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাকে সার্বক্ষনিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন করোনা যোদ্ধা স্ত্রী ডাঃ নাদিরা পারভীন।
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা জানান, বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যার হাসপাতাল। এখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র দুজন। করোনাকালীন সময়ে প্রশাসনিক কাজে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ব্যাস্থ থাকার কথা ছিল কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারনে ডাঃ শওকত আলী দেশে করোনা শুরু হওয়ার পর যখন নুমনা সংগ্রহ করতে চিকিৎসকরা ভয় পাচ্ছিল তখন ডাঃ শওকত আলী নিজেই গ্রামে গ্রামে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এবং শুরু থেকে অদ্যবধি এক নাগারে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয় করোনাকালীন সময়ে দেশের অধিকাংশ হাসপাতালে সাধারন রোগীদের মুঠোফোনে চিকিৎসা সেবা বা পরামর্শে সেবা দেয়ার রেওয়াজ চালু হলেও করোনার শুরু থেকে ডাঃ শওকত আলী উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরাসরি সাধারন রোগীদের সেবা প্রদান করেন। বরিশালের ১০টি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যেএকমাত্র উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীর সেবা দেয়া হয়। উজিরপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শওকত আলী ও তার সহধর্মীনি মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাদিরা পারভীন দম্পতি এক বছর তিন মাস মাঠ পর্যায়ে সেবা দেন। অবশেষে ডাঃ শওকত আলী করোনা আক্রান্ত হন স্ত্রী সুস্থ্য থাকলেও স্বামীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্ত্রী ডাঃ নাদিরা পারভীন বলেন, দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মানুষকে সেবা দেয়া একটি রুটিন কাজ। কিন্তু দেশের মানুষের দূর্যোগ ও দুঃসময়ে রোগীদের সেবা দিতে পেরে একজন চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। “করোনা মানবতার সেবক হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা স্বামী স্ত্রী এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি ”। দেশের এই সময়ে করোনা যুদ্ধের মাঠে বীরের মত মানুষের পাশে থেকে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। স্বামী সুস্ত্য হলে পুনরায় এক সঙ্গেই দুজনে কাজে যোগ দিবো।