গৌরনদী
সাভারে গৌরনদীর ছাত্রসহ জোড়া খুন, প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গৌরনদীতে মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা সাভারের হেমায়েতপুর যাদুরচর এলাকা থেকে শুক্রবার পুলিশ সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র নাজমুল হোসেন (১৭) ও খালাতো ভাই সাভার হেমায়েতপুরের আল-নাসির ল্যাবরেটরী স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ রায়হান (১৮) লাশ উদ্ধার করেছে। সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র নাজমুল হোসেন (১৭) হত্যার প্রতিবাদে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক সড়কের সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেছে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী-শিক্ষক-অভিভাবক ও এলাকাবাসি। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও সমাবেশে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ এলাকার নারী পুরুষ শতস্ফুর্তভাবে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে বক্তব্য রাখেন গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহাবুব আলম, যুবলীগ নেতা আবুল বাশার, নিহতের চাচা মাঈনুদ্দিন মোল্লা, মামা মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র আরাফত হোসেন, মাহসিব আলম, মুশফিক রহমান মোঃ সিয়াম প্রমূখ । বক্তারা ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ।
স্থাণীয় লোকজন, স্বজন ও পুলিশ জানান, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের পশ্চিম শাওড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকার রেন্ট-এ কার চালক নেছার উদ্দিন মোল্লার পুত্র সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র নাজমুল হোসেন (১৭) গত বুধবার সাভার হেমায়েতপুরের যাদুরচরের গ্রামে প্রবাসী খালু রতন খানের বাড়িতে বেড়াতে যান। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে নাজমুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে তার খালাতো ভাই প্রবাসী খালু রতন খানের ছেলে রায়হান বাসা থেকে বের হয়ে যান। তারা ওই দিন রাতে আর বাসায় ফিরেনি। পরের দিন শুক্রবার সকালে পুলিশ সাভার উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামের পাট ক্ষেত থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করেছে । পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা জানান, তারা থানায় গিয়ে নাজমুল হোসেন ও রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন।
সাভার হেমায়েতপুর ভাকুর্তা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বলেন, কৃষকরা ক্ষেতে কাজ করতে এসে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। উদ্ধারকৃত লাশের গলায় ছুরিকাঘাতসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ক্ষতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা বৃহস্পতিবার রাতের যে কোন সময় কুপিয়ে হত্যা হত্যার পর লাশ দুটি ওইস্থানে ফেলে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ধারাল চাক্কু উদ্ধার করা হয়। এদিকে শনিবার রাতে নাজমুলের লাশ গৌরনদীর পশ্চিম শাওড়া গ্রামে পৌছলে সহপাঠি, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভাড়ী হয়ে যায়। পুরো গ্রামটি শোকে পরিনত হয়।
সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ অলি-উল্লাহ বলেন, আমার বিদ্যালয়ের মেধাবী ও ভদ্র-বিনয়ী ছাত্রটি এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে যা হৃদয়া বিদারক। আমি হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জনাচ্ছি। সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, হত্যা কান্ডের ঘটনায় শনিবার অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ১০ কিশোকে আটক করে জ্ঞিাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুনের রহস্য উদঘাটনসহ খুনিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।