গৌরনদী
বগুড়া থেকে কলেজ ছাত্রী স্ত্রীকে বরিশালে বেড়াতে এনে হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়ার গাবতলী সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের ছাত্রী নাজনিন আক্তারকে হত্যা করে লাশ গুমের স্বীকারোক্তিতে বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের ঝাড়ুদার সাকিব হোসেন হাওলাদারকে (২৪) নিয়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহরগ্রামে মঙ্গলবার দিনভর অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সাকিবের পিতা ভ্যান চালক আঃ করিম হাওলাদারের ভাড়াটিয়া বাসার সেফটি ট্যাংক থেকে খুনের আলমত উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সুক্রে জানা গেছে, বগুড়ার গাবতলী সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নাজনিন আক্তার (১৮) এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ এর (ফেইসবুক) মাধ্যমে পরিচয় হয় বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার নতুনচর জাহাপুর গ্রামের আঃ করিম হাওলাদারের পুত্র সাকিব হোসেন হাওলাদারের। সাকিব হোসেন বর্তমানে বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মরত। বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরিচয়ের একপর্যায়ে গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর সাকিব হোসেন ভূ‚য়া ঠিকানা ব্যবহার করে কলেজ ছাত্রী নাজনিনকে বিয়ে করে।
কলেজ ছাত্রী নাজনিন আক্তারের ভাই আঃ আহাদ প্রমাণীক বলেন, গত ২৪ মে তার ভগ্নিপতি সাকিব হোসেন হাওলাদার তার পিতার অসুস্থ্যতার কথা বলে আমার বোনকে নিয়ে বরিশালে আসেন। পরবর্তীতে তাদের মুঠো ফোন বন্ধ ও কোন প্রকার যোগাযোগ না থাকায় গত ২৬ মে আমার পিতা আব্দুল লতিফ বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী ও সেনানিবাসে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘাতক সাকিব হোসেন হাওলাদার বলেন, বিয়ের পর একাধিকবার আমি আমার শ^শুড়বাড়ি বগুড়া সদর থানার সাপগ্রামে বেড়াতে যাই। আমার পিতার অসুস্থ্যতার কথা বলে গৌরনদী বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে পিতার ভাড়াটিয়া সালাউদ্দিনের বাড়িতে গত ২৪ মে রাত ৯টার দিকে নিয়ে আসি। এ সময় আমার পিতা-মাতা কেউ ভাড়া বাসায় ছিলনা। নানা বাড়ি বেড়াতে যায়। আমার স্ত্রী কাঁচা ঘর ও ল্যাট্রিন দেখে আমার সাথে ঝগড়া করে। এতে আমি ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের বাহিরে থাকা প্লাস্টিক রশি দিয়ে গলায় ফাঁস ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পাশের্^ সেভটি ট্যাংকিতে লাশ গুম করি। পরবর্তীতে আমার শ^শুড় আব্দুল লতিফ প্রমাণিক গত ২৬ মে আমার ইউনিটে ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রক্ষিতে ইউনিট ইনচার্জ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমি খুন ও লাশ গুমের কথা স্বীকার করি।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন জানান, সাধারন ডায়েরী ও অভিযোগের সুত্র ধরে পুলিশ সাকিব হোসেন হাওলাদারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে নাজনিনকে তার পিতার ভাড়াটিয়া বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহরগ্রামে বাসায় নিয়ে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পাশে ল্যাট্রিনের সেফটি ট্যাংকির মধ্যে লাশ গুম করে। গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের সহায়তা বগুড়া পুলিশ সেফটি ট্যাংকে পাম্প দিয়ে পানি নিস্কাশন করে। ট্যাংকির মধ্যে লাশের শরীরের বিভিন্ন অংশের চামড়াসহ ২টি নক এবং পরিধেয় ওড়না উদ্ধার করে। এ ছাড়া লাশ উদ্ধারের জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।