গৌরনদী
ভাতিজার লাশ ফেলে পালিয়ে যান চাচা, পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ মায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাতিজার লাশ ফেলে পালিয়ে গেল চাচা আগৈলঝাড়া উপজেলার বেলুহার গ্রামের ঠিকাদার মাসুম কাজী (৪৫)। পরে জরুরুী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌরনদী মডেল থানা পুলিশকে জানালে বুধবার রাত ১১টা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজাতে নেন। বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল পাঠানো হবে। এদিকে তরুনের মা হাসি বেগমের (৪০) অভিযোগ তার দেবর তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যা মামলা দায়েরের জন্য মা হাসি বেগম আগৈলঝাড়া থানায় অবস্থান করছেন।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দেওয়ান আব্দুস সালাম জানান, বুধবার রাত ১০টার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের বেলুহার মৃত আশরাফ কাজীর পুত্র মাসুম কাজী (৪৫) ও তার সহযোগী একই গ্রামের জাহিদ সরদার উজ্জল কাজী (২৪) নামে এক তরুনকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য নিয়ে আসেন। তারা বলেন, এই রোগী গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। এ সময় তিনি (চিকিৎসক) পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পান তরুন অনেক আগেই মারা গেছে এবং গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যার কোন লক্ষন নেই। ধারনা করা হচ্ছে রোগীকে হত্যা করা হয়েছে। চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের জেরা শুরু করলে এক পর্যায়ে পরে বাইরে যাওয়ার অজুহাতে মাসুম কাজী (৪৫) ও তার সহযোগী একই গ্রামের জাহিদ সরদার হাসপাতালের জরুরী বিভাগে লাশ ফেলে পালিয়ে যান। অনেক সময় যাওয়ার পরে তারা ফিরে না আসায় চিকিৎসক দেওয়ান আব্দুস সালাম গৌরনদী মডেল থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ রাত ১১টায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত মোঃ তৌহীদুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে লাশ ফেরে পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। আজকে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠানো হবে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বেলুহার গ্রামের মৃত মাহাবুবুর রহমান কাজীর স্ত্রী নিহত তরুন উজ্জল কাজীর (২৪) মা হাসি বেগম জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পরে জমাজমি নিয়ে তার দেবর মাসুম কাজীর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জের ধরে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে গত ২৫ মে দেবর মাসুম কাজী তাকে (হাসি বেগমকে) ছোট মেয়ে তানহা (৫)কে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তিনি তার বড় মেয়ে বিবাহিতা সাকিবা আক্তার রিতুর বাড়িতে চলে যান। এ সময় তার পুত্র উজ্জল কাজী (২৪) বরিশাল অবস্থান করছিলেন। ওই দিন রাতে দেবর মাসুম কাজী তার ভাতিজা উজ্জল কাজীকে খরর দিয়ে বাড়িতে আনেন। তিনি (হাসি) অভিযোগ করে বলেন, দেবর মাসুম কাজী তার সহযোগীদের নিয়ে আমার ছেলে উজ্জল কাজীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক যখন বলেন এটা আত্মহত্যা নয়, ধারনা করা হচ্ছে হত্যা করা হয়েছে। তখন আমার দেবর মাসুম কাজী ও সহযোগী জাহিদ সরদার হাসপাতালে উজ্জলের লাশ ফেলে পালিয়ে আসেন।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে একাধিকবার মাসুম কাজীকে ফোণ দিলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাজাহারুল ইসলাম বলেন, নিহত উজ্জল কাজীর মা পুত্র হত্যার অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।