বরিশাল
কীটনাশক পানে ৬ দিনে ৭ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহারের কারণে হঠাৎ করেই আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। গত ৬ দিনে কীটনাশক (বিষ) পানে আত্মহত্যা করতে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে অন্তত ৭ জন। এদের মধ্যে অধিকাংশরাই পারিবারিক অশান্তির কারণে আত্মহত্যা করতে বিষপান করেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ বখতিয়াল আল মামুন। গুরুতর অসুস্থদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবার সাথে অভিমান করে শনিবার দুপুরে বিষপান করে উপজেলার গৈলা গ্রামের নুর ইসলাম বালীর পুত্র আজিম বালী (১৭), একইদিন সকালে নোয়াপাড়া গ্রামের নিত্যানন্দ রায়ের পুত্র নয়ন রায় (১৮), শুক্রবার বিকেলে কোদালধোয়া গ্রামের নিতাই দাসের কন্যা ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অনামিকা দাস (১১), বৃহস্পতিবার বিকেলে কারফা গ্রামের শিশির বিশ্বাসের স্ত্রী রসনা বিশ্বাস (৪০), বুধবার দুপুরে উত্তর শিহিপাশা গ্রামের এসকেন্দার সরদারের পুত্র ইব্রাহিম সরদার (১৭), মঙ্গলবার সকালে নোয়াপাড়া গ্রামের বীরেন মন্ডলের পুত্র কনন মন্ডল (২৫), রবিবার রাতে পূর্ব সুজনকাঠী গ্রামের মিরাজ মোল্লার স্ত্রী মনি বেগম (২৩) আত্মহত্যার জন্য কীটনাশক পান করে।
উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, পারিবারিকভাবে আবেগ প্রবণতার কারণে এলাকার লোকজন মুলত আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ি আত্মহত্যার চেষ্টাকারীদের বয়স ১০ থেকে ৪০র মধ্যে। আবার ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করে অবশিষ্ট কীটনাশক অনাকাঙ্খিতভাবে ঘরে রাখার কারণে হাতের কাছে কীটনাশক পেয়ে তার মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রবনতা বেড়ে গেছে।
আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, বর্তমান ইরি-বোরো চাষের মৌসুমে এই এলাকায় ঘরে থাকা অবশিষ্ট অরক্ষিত কীটনাশক হাতের কাছে পাওয়ার কারণে আবেগ প্রবণ হলেই সহজেই ছেলে-মেয়েরা আত্মহননের জন্য তা পান করছে। এজন্য পরিবার সদস্যদের সচেতনতার সাথে কীটনাশক ব্যবহার ও সংরক্ষণ করার কথা জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি দোকানে কীটনাশক বিক্রির নীতিমালা থাকার পাশাপাশি পরিবার প্রধান ছাড়া ব্যবসায়িরা কীটনাশক বিক্রি বন্ধ করলে আত্মহত্যার মতো পাপ কাজ থেকে অনেকটাই ছেলে মেয়েদের রেহাই করা যাবে বলেও জানান তিনি।