গৌরনদী
৬ মাসেও সন্ধান মেলেনি মাদ্রাসা ছাত্রের
নিজস্ব প্রতিবেদক, নিখোঁজের পর ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্ধান মেলেনি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের মনিরুজ্জামান হাওলাদারের পুত্র ও গৌরনদীর সীমান্তবর্তী কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ শাখার ছাত্র ইসমাঈল হাওলাদারের (১৫)।
নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রের পিতা মনিরুজ্জামান হাওলাদার জানান, রমজানপুর গ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় তার দুই পুত্র ইসমাঈল হাওলাদার (১৫) ও গোলাম মহিয়ান (৯) হেফজ শাখায় অধ্যায়নরত। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকালে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম মাদ্রাসায় গিয়ে ইসমাঈল হাওলাদার ও গোলঅম মহিয়ানের সাথে দেখা করে টাকা-পয়সা দিয়ে আসেন। ওইদিন রাতেই রহস্যজনক ভাবে জেষ্ঠ্যপুত্র ইসমাঈল হাওলাদার (১৫) নিখোঁজ হন । পরদিন সকালে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছেলে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাকে মুঠোফোনে জানালে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর ইসমাঈলকে না পেয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর কালকিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন।
তিনি (ছাত্রের বাবা) অভিযোগ করে বলেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরদিনই ওই মাদ্রাসার হেফজ শাখার শিক্ষক মাওলানা ফোরকান মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। শিক্ষক মাওলানা ফোরকানের নম্বরে যোগাযোগ করার পরও তিনি ফোন ধরেননি। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার চারদিন ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেনের কাছে পুত্র হারানোর বিষয়ে ফোন করে জানতে চাইলে তিনিও ফোন ধরেননি। পরে মাদ্রসায় গিয়ে ছেলে নিঁখোজ সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানে না বলে জানান। আমার ধারনা ছেলে ইসমাঈল হাওলাদারকে শিক্ষকরাই গায়েব করেছেন। পুত্রকে ফিরে পেতে আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংশ্লিষ্টদের কাছে ধর্না দিয়েও কোন সুফল পাইনি।
এদিকে নিঁখোজের ঘটনায় মিদুলের বাবা মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ নভেম্বর পুত্রকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ এনে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেন, সহকারী শিক্ষক মাওলানা ফোরকান, রুহুল আমিন ও মাওলানা বিল্লাল হোসেনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মোঃ ফয়সাল আল মামুন মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মাদ্রাসার হেফজ শাখার শিক্ষক মাওলানা ফোরকানের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইালে তিনি বলেন, ঘটনার দিন ওই ছাত্রের মা মাদ্রাসায় এসে ছেলের সঙ্গে দেখা করে পড়াশোনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে । হয়তো মায়ের চাপে পড়াশোনার ভয়ে মাদ্রাসা থেকে ইসমাঈল পালিয়েছে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেন বলেন, মায়ের ইচ্ছা ছেলেকে হাফেজী পড়াবে কিন্তু ছেলে তা পড়তে চাইছিলো না। তাই হয়তো পালিয়েছে। ছাত্র নিখোঁজের সঙ্গে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।