Gournadi24.com
গৌরনদী ২৪ ডটকম | logo
ঢাকা, ১২ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    • প্রচ্ছদ
    • প্রধান সংবাদ
    • গৌরনদী
    • বরিশাল
    • সারাদেশ
    • খেলা
    • বিনোদন
    • সম্পাদকীয়
    • বাংলা কনভার্টার
    • ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
    • প্রচ্ছদ
    • প্রধান সংবাদ
    • গৌরনদী
    • বরিশাল
    • সারাদেশ
    • খেলা
    • বিনোদন
    • সম্পাদকীয়
    • বাংলা কনভার্টার
    • ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
    মেনু

    গৌরনদী

    জীবন যুদ্ধে জয়ী গৌরনদীর শ্রেষ্ঠ পাঁচ নারীর সাফল্য গাঁথা সংগ্রামী জীবন, সমাজের দৃষ্ঠান্ত

    | ২০:৩৯, অক্টোবর ২১ ২০২০ মিনিট


    নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার অসহায় হতদরিদ্র পাঁচ নারী জীবন সংগ্রামে জয়ী হয়েছেন। কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন, কঠোর পরিশ্রম ও দারিদ্ররতার সঙ্গে যুদ্ধে করে সমাজে আজ তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। অর্থনৈতিক সাফল্য, শিক্ষা ও চাকুরী সাফল্য, সফল জননী, নির্যাতন ও বিভীষিকা মুছে এগিয়ে যাওয়ার সাফল্য ও সমাজ উন্নয়নে অসামন্য অবদান রাখায় সমাজের দৃষ্ঠান্তসৃষ্টিকারী ওই পাঁচ নারীরা হলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বুলবুলের স্বামী পরিত্যাক্তা স্ত্রী খালেদা বেগম ( অর্থনৈতিক সফল) পিংলাকাঠী গ্রামের মৃত সদরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী মাসহুরা বেগম (শিক্ষা ও চাকুরী), চরগাধাতলী গ্রামের নারায়ন চন্দ্র ঘোষের স্ত্রী ইতি রানী ঘোষ (সফল জননী), উত্তর কান্ডপাশা গ্রামের গ্রামের মিজানুর রহমানের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আজমির নাহার (নির্যাতন ও বিভীষিকা মুছে ফেলে স্বপ্ন পুরন) ও দক্ষিন পশ্চিম পাড়া গ্রামের সীতা রানী দেবনাথ (সমাজ উন্নয়ন)। উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রোকেয়া দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ৫ জয়িতা নারীকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে সম্মননা ক্রেষ্ট, সনদ প্রদান করা হয়।

    স্থানীয় লোকজন, গৌরনদী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও বরিশাল মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাশিদা বেগমসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে জীবন সংগ্রামে জয়ী পাঁচ নারীর জীবন সংগ্রামের চিত্র।
    খালেদা বেগম ঃ ১৭ ভাই বোনসহ ২০ সদস্যর পরিবারের সন্তান খালেদা বেগম। অভাবের কারনে ১৬ বছর বয়সে তাকে বিয়ে দেন। স্বামী ছিল নারী লোভী ও পরকীয়ায় আসক্ত তাই সংসারে সুখ ছিল না। তাই স্বামী তাকে অমানবিক নির্যাতন করত। এমন কি দ্বিতীয় বিয়ে করে তিন মাসের গর্ভজাত সন্তানসহ তাড়িয়ে দেন। খালেদা তিন মাসের সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে উঠেন। শিশু সন্তানকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। প্রাইভেট পড়িয়ে কখনো সেবকিার কাজ, কখনো আয়ার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রশিকার নিরক্ষরতা অভিযান কর্মসূচীতে শিক্ষকতা করে, হাঁস মুরগি পালন, ধাত্রীর কাজ করে যুদ্ধ করেন। তিল তিল করে ছেলেকে গড়ে তুলছেন। ছেলেকে এইচএসসি পাশ করিয়েছেন। নিজস্ব উদ্যোগে নিজের অর্থায়নে “আনন্দ গ্রাম বাংলা” ঋৃনদান সমিতি গঠন করে ক্ষুদ্র ঋৃন দিয়ে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষকে স্ববলম্ভি করেছেন। পাাশাপাশি নিজেও অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করেছেন। পরবর্তিতে ২০১৬ সালের এলাকাবাসির সমর্থন নিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এভাবে জীবন যুদ্ধে লড়াই করে দূর্বিসহ জীবন মুছে ফেলে নতুন জীবনে ফিরে আসেন খালেদা বেগম। বর্তমানে খালেদা সমাজের অন্য দশ জনের মতো জীবন যাপন করে নিজের পরিচয়ে সন্তানদের মানুষ করেছেন।

    মাসহুরা বেগম ঃ মাসহুরা বেগম ৬ বোন ও ২ ভাইর মধ্যে ৬ষ্ঠ সন্তান ছিলেন। বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরীজীবি। এত বড় সংসার শুধু বাবার আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। সংসার ঠিকমত চলত না। তার মা বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব নিকাশের দ্বারা সংসার চালাতেন। ১৯৭৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পরে বাবা মারা যান। হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন। কোথায় যাবেন? কি করবেন? কিভাবে পড়াশোনা চলবে? তখন বরিশাল শহর ছেড়ে মা তাদের নিয়ে এলাকায় চলে আসেন। এ সময় মাসহুরার বিবাহিত বড় বোন তাকে গৌরনদীতে নিয়ে আসেন এবং সরকারি গৌরনদী কলেজে ভর্তি করিয়ে দেন। ওই বছর বড় বোন তাকে গৌরনদীর পিংলাকাঠী গ্রামের ব্যবসায়ী সদরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে দেন। ওই অবস্থায় স্বামীর সংসারে থেকেও নিজের স্বপ্ন পুরনে পড়াশোনা অব্যহত রাখেন। স্বামীর ঘর সংসার সামাল দিয়েও নিজের চেষ্টায় ১৯৭৯ সালে এইচএসসি, ১৯৮৪ সালে বিএ পাশ করে পিংলাকাঠী হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। ১৯৯০ সালে বিএবিএড কোর্স শেষ করে। ২০১১ সালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। সংসার সামাল দিয়ে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেও ২০১২ সালে এমএ পাশ করেন। জীবন যুদ্ধে হার না মানা ওই নারী ২০১৯ সালে জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত হন।

    ইতি রানী ঘোষঃ মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের সুরেন্দ্র নাথ ঘোষের কন্যা ইতি রানী ঘোষ। ৫ ভাই ৪ বোনের মধ্যে সে ছোট। ভাই বোনের মধ্যে ছোট হওয়ার পরেও কোন আদর সোহাগ পাননি। বাবা মারা যাওয়ার পরে সকল ভাইদের গলগ্রহ হয়ে থাকতে হয়েছে। বড়দাদা ও তাদের স্ত্রীদের মন যুগিয়ে চলতে হয়েছে। কোন রকম এসএসসি পাশ করার পরেই ভাইয়েরা তাদের ঘারের বোজাা নামাতে বাল্য বয়সে ইতি রনীকে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দেন। স্বামীর ঘরে এসেও কোন সুখ পাননি। কারন স্বামীর স্বল্প আয়ের সংসারে ৪ বোন ৩ ভাইসহ ৯ সদস্যর সংসার তাকেই চালাতে হয়। স্বামীকে খুশি রাখতে সংসারের বড় বউ হিসেবে সকলের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের সুখ বিসর্জন দিতে হয়েছে। পাশাপাশি নিজের দুই সন্তানের লেখাপড়া ও তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। বড় ছেলে এমএসসি টেক্সাটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে। বর্তমানে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সাটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিষ্টিটিউট সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ছোট ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পাশ করেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা ওয়াসায় কর্মরত। অর্থ কষ্টসহ নানান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে দুটি সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছে। তাই তাকে রতœগর্ভা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জয়িতা ২০১৯ নির্বাচিত করা হয়।
    আজমির নাহারঃ গৌরনদী উপজেলার কান্ডপাশা গ্রামের মৃত আঃ হাকিম সরদারের কন্যা আজমির নাহার। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সে বড় সন্তান। বাবার অভাবের সংসার ছিল। সংসারের খরচ চালাতে অনেক সময় বাবার সঙ্গে আজমিন নাহার কাজ করতেন। এমন কি নিজের লেখা পড়া খরচ চালাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি করতেন। ২০০৫ সালে নিজের চেষ্টায় বিএ পাশ করে গৌরনদী গালর্স স্কুলের আইসিটি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মিজানুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। তার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে স্বামীকে আঁকড়ে ধরে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেখাপড়া চালিয়ে যান। ২০১৩ সালে স্বামী সংসার সামলিয়ে এমএ পাশ করেন। স্বামীর চাকুরীর কারনে দুরে থাকায় সন্তানের মা হতে পারেনিন কিন্তু স্বামীর অত্যাচারে ক্ষত বিক্ষত হয়েছেন। পর-নারী লোভী স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়ে অবশেষে ২০১৮ সালে তাকে তালাক দেয়। নিঃসন্তান আজমির নাহার স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ভেঙ্গে পড়েন। পরবর্তিতে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রাম শুরু করেন। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করায় তাকে জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

    সীতা রানী দেবনাথ ঃ গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত রাধা কান্ত দেবনাথের কন্যা সীতা রানী দেবনাথ। বাবা মায়ের ৭ সন্তানের মধ্যে সে ছোট ছিলেন। বাবা ছিলেন একজন পল্লি চিকিৎসক। তার ১১ বছর বয়সে বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর বড় ভাইদের আদর যত্ব পাননি। অভাবের সংসারে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করতে হয়। সীতা রানী ছোট বেলা থেকেই ছিলেন মানব দরদী। মানুষের সমস্যা হলেই ছুটে গিয়ে পাশে দাড়াতেন। স্বামীর মৃতুর পরে ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন। নাবালক সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নেমে পড়েন। সন্তানদের বাঁচাতে ধুপকাঠি তৈরীর কারখানায় কাজ করেন। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে বড় ছেলেকে এম.এ, ছোট ছেলেকে বি.এ ও মেয়েকে এইচএসসি পাশ করান। নিজের সংসার সন্তানকে সামাল দিয়ে সময় পেলেই সমাজ সেবায় নেমে পড়েন। ২০১৬ সালে সীতা রানী দেবনাথ বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন একজন সংগ্রামী মানুষ তিনি। তাই সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখায় তাকে জয়িতা ২০১৯ নির্বাচিত করা হয়।

    Post Views: ৬০৮

    Share this:

    • Facebook
    • Twitter

    সংশ্লিষ্ট খবর

    • গৌরনদীতে মানুষ মানুষের জন্য সংগঠনের ঈদ পূর্নমিলণী অনুষ্ঠিত
    • গৌরনদীতে মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ, লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ
    • গৌরনদীর টরকী বন্দর মালিক সমিতির কমিটি গঠন
    • গৌরনদীতে বিশেষ সাহিত্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত ‎
    • গৌরনদতে মহাসড়কের ওপর ট্রাক পার্কিং, চার যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-২ আহত ৩০
    • গৌরনদী বাসষ্টান্ডে নিউ বনলতা রেষ্টুরেন্ট এ্যান্ড ফাষ্টফুট এর উদ্ধোধন
    • গৌরনদী গালর্স স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষক বাসভবনে রহস্যজনক আগুন
    Top